বোনকে বকা! ফরাক্কার তিলডাঙা হাইস্কুলে হাজির হয়ে প্রবীণ শিক্ষককে মারধর করেছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর দাদা।
মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় প্রথমে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কিন্তু বুধবার মোস্তাকিম আনসারি নামে ওই যুবককে স্কুলের সামনে ঘোরাফেরা করতে দেখে তর সয়নি কিছু ছাত্রের। ‘বদলা’ নিতে তারা অভিযুক্তের উপরে চড়াও হয়। শিক্ষকেরা কোনও মতে মোস্তাকিমকে উদ্ধার করেন।
কিন্তু ছাত্রেরা তাতে নিরস্ত হয়নি। বরং মোস্তাকিমকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। প্রচুর আসবাব ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আনে। স্কুলে যান ফরাক্কার বিডিও সুব্রত চক্রবর্তীও। প্রধান শিক্ষক আখতারুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পরে মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করে। |
গত ১৩ জুলাই মুর্শিদাবাদেরই সাগরদিঘিতে সাহাপুর সাঁওতাল হাইস্কুলে শিক্ষক নিগ্রহের প্রতিবাদে কিছু ছাত্র স্কুলে ভাঙচুর চালিয়েছিল। অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতারও করে। তবে এ দিন কোনও ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। স্কুল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন ইতিহাসের শিক্ষক মধুসূদন দাস। সেই খবর পেয়ে তার দাদা মোস্তাকিম স্কুলে এসে তাঁকে মারধর করে। তবে এ দিন সে ক্ষমা চাইতে এসেছিল বলেই মোস্তাকিম দাবি করেছে। যদিও অসুস্থ হয়ে পড়ায় মধুসূদনবাবু স্কুলে আসতে পারেননি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দীর্ঘদিন এই স্কুলে পড়াচ্ছি। এ রকম কিছু ঘটতে পারে, ভাবতে পারিনি।”
প্রধান শিক্ষক আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘‘মধুসূদনবাবু প্রবীণ শিক্ষক। বছর দুয়েক পরেই অবসর নেবেন। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। মঙ্গলবার তিনি এক ছাত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দিলে সে স্কুলের মধ্যেই গালিগালাজ শুরু করে। তাকে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। এর পরেই তার দাদা মদ্যপ অবস্থায় এসে মধুসূদনবাবুর উপরে চড়াও হয়।” ওই দিনই স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্য ও অভিভাবকেরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, মোস্তাকিম স্কুলে গিয়ে ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু এ দিন তাকে দেখেই ছাত্রছাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, “উপায়ান্তর না দেখে আমরা ছেলেটিকে স্কুলের অফিসঘরে ঢুকিয়ে বন্ধ করে রাখি। তাতে কিছু ছাত্র খেপে উঠে স্কুলে ভাঙচুর শুরু করে।’’
স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক হজরত আলির কথায়, ‘‘শিক্ষককে মারধর অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। এ দিনই ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’ প্রধান শিক্ষক বলেন, “দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকেও স্কুল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” স্কুলে ভাঙচুর চালানোয় অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা পরিচালন সমিতি স্থির করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। |