রাজ্য জুড়েই আদালতে কর্মী-নিয়োগ শুরু হয়েছে। কিন্তু কর্মী-নিয়োগে সরকারি নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন সৈনিকেরা। রাজ্যের ২০টি আদালতে ক্লার্ক, টাইপিস্ট, স্টেনো ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মিলিয়ে ১২৭৯ জনকে নিয়োগের কথা। প্রাক্তন সৈনিকেরা জানতে পেরেছেন, মাত্র তিনটি জেলা ছাড়া (উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং বর্ধমান) অন্য জেলাগুলি হান্ড্রেড-পার্সেন্ট রোস্টার না মেনেই নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে। সেখানে প্রাক্তন সৈনিকদের জন্য নিয়মমাফিক কোনও সংরক্ষণই নেই। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন প্রাক্তন সমরকর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা-সৈনিক বোর্ড ও হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকেও ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ।
প্রাক্তন সৈনিক শশবিন্দু মান্না বলেন, “সরকারি নিয়মেই রয়েছে হান্ড্রেড পার্সেন্ট রোস্টার মেনে নিয়োগ করতে হবে। আমরা মেদিনীপুর আদালতের শূন্যপদে চাকরির জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, মেদিনীপুর আদালত আমাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করেনি। আমরা দেশের জন্য যৌবন বয়সে লড়াই করেছি। তাই সরকার আমাদের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণের নিয়ম করেছে। অথচ, আদালতের নিয়োগেই তা মানা হচ্ছে না!” যদি শেষ পর্যন্ত প্রাক্তন সৈনিকদের সুযোগ না দেওয়া হয়, তা হলে আদালতে নিয়োগের এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রাক্তন সৈনিকরা উচ্চ-আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে বহু পদ শূন্য। এ বার সেই শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের ২০টি আদালতে ১২৭৯ জনকে নিয়োগ করা হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গ্রুপ-সি পদে ৫ শতাংশ ও গ্রুপ-ডি পদে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ থাকার কথা প্রাক্তন সৈনিকদের জন্য। দুই চব্বিশ পরগনা ও বর্ধমান সেই নিয়ম মানলেও দার্জিলিং, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ অন্য জেলার আদালতে তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আদালতে নিয়োগের জন্য যে সমস্ত সৈনিক আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁদের দাবি, নিয়োগের যে নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে তফসিলি জাতি, উপজাতি, ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষণের উল্লেখ থাকলেও প্রাক্তন সৈনিকদের জন্য সংরক্ষণের উল্লেখ নেই। এটা জানার পরেই প্রাক্তন সৈনিকরা সৈনিক-বোর্ড ও হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি জানান। তার পরেও এ বিষয়ে আদালত উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। প্রাক্তন সৈনিক শশবিন্দুবাবুর কথায়, “আরও কিছুদিন দেখব। তার পরেও সংরক্ষণের সুযোগ না পেলে আদালতের বিরুদ্ধেই হয়তো আদালতে যেতে হবে। তবে আমাদের আশা, আমরা যাঁরা দেশের জন্য লড়াই করেছি, আদালত আমাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গেই দেখবে।” |