পাশাপাশি দুটো নেটে দু’জন। একটায় রোহিত শর্মা, অন্যটায় মনোজ তিওয়ারি। সবে বীরু-গম্ভীর আর কোহলির ব্যাটিং শেষ হয়েছে, রোহিতের সঙ্গে প্যাড পরা মনোজের চেহারাটাও ঢুকল পাশের নেটে। এই প্রথম এই সফরে নেটে চার নম্বরে!
‘প্রতিভাবান’ রোহিতের চেয়ে ভাল ব্যাটিং নাকি নেটে কেউ করছে না, বলেছিলেন গম্ভীর। প্রেমদাসায় আজ দুপুরে রোহিতকে দেখে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না। সব সময় ভুরু কুঁচকে রয়েছে। বরং অনেক বেশি উদ্দীপ্ত ও চনমনে দেখাল মনোজকে। কিন্তু তাতে কী? সন্ধেয় কলম্বোয় ভারতীয় হাই কমিশনারের নেমন্তন্ন রক্ষায় টিম যখন বেরোচ্ছে, তখনও ঠিক হয়নি কে কাল প্রথম এগারোয়। মনোজকে নেটে চার নম্বরে ব্যাট করানো হতে পারে, কিন্তু কাল খেলছেন বা খেলতে পারেন এমন কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। দিন-রাতের ম্যাচ, অনেক সময় ম্যাচের দিন সকালে চূড়ান্ত দল নির্বাচন হয়। কিন্তু ঘটনা হল, মনোজের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। ধোনি বা ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষে এই নিয়ে কোনও বক্তব্যও নেই। বরং একটা মহলের বক্তব্য হচ্ছে, উইনিং কম্বিনেশন এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভেঙে লাভ নেই। বরং মঙ্গলবার সিরিজ জিতে গেলে শেষ ম্যাচে মনোজের কথা ভাবা যেতে পারে। |
ধারে ও ভারে পিছিয়ে থাকা সিরিজকে ধোনি কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, ক্রমাগত প্রচারমাধ্যমকে এড়িয়ে যাওয়া থেকে পরিষ্কার। ঠিক দুপুর বারোটায় হঠাৎ ভারতীয় মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে খবর এল, সাড়ে বারোটায় টিম হোটেলেই প্রেস কনফারেন্স। সিরিজের নিষ্পত্তির ম্যাচ বলে কথা, স্বভাবতই পড়িমরি করে ছুটল এখানে থাকা গুটিকয়েক ভারতীয় মিডিয়া আর গিয়ে দেখা গেল প্রায় ফাঁকা একটা কনফারেন্স রুমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সুরেশ রায়নাকে! গত ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচ রায়না নতুন করে কী বলবেন? কী বলতে পারেন? “সিরিজ জেতার জন্য টিম মরিয়া হয়ে আছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সে ক্ষেত্রে দারুণ হয়েছে বলতে হবে”, এসব বলছিলেন। কিন্তু শোনার লোক থাকলে তো! এমনিতে ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক প্রচারমাধ্যমের সামনে আসবেন, এটাই রীতি। কিন্তু টিম ইন্ডিয়া-র ক্ষেত্রে ইদানীং সেই রীতি অবলুপ্তপ্রায়। সিরিজ না জিতলে ধোনি নাকি প্রচারমাধ্যমের সামনে আসবেন না। কাউকে একটা পাঠাতে হয়, তাই রায়নাকে পাঠানো। চূড়ান্ত ব্যর্থ রোহিতকে খেলিয়ে যাওয়া নিয়ে শ্রীলঙ্কার কাগজে পর্যন্ত প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট নির্বিকার। ও দিকে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সিরিজ থেকে সঙ্গকারার ছিটকে যাওয়া। আঙুলের যা চোট, অন্তত ছয় সপ্তাহ বাইরে থাকতে হবে ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে ফিট চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। চান্দিমলের কাল তাঁর জায়গায় কিপিং করার কথা। রাতে হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে জয়বর্ধনে বলছিলেন, “সঙ্গার থাকা-না থাকা সব সময়ই ফ্যাক্টর।”
সঙ্গকারা নেই, দিলশান ফর্মে নেই। টনি গ্রেগের কথা ধরলে কালই সিরিজ জিতবে ভারত। তার পর ধোনি হয়তো আসবেন প্রচারমাধ্যমের সামনে! |