সম্পাদক সমীপেষু...
সচেতনতার অভাব
সাবান তো স্নানের জন্য, হাত ধোওয়ার জন্য নয়’ শীর্ষক সমীক্ষামূলক নিবন্ধে (১৫-৫) স্বাতী ভট্টাচার্য স্বাস্থ্যবিধি অবহেলার বাস্তব চিত্রটি তুলে ধরেছেন। স্বাস্থ্য-সচেতনতার বিষয়ে বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিক প্রচারের ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষ অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। যত দিন যাচ্ছে, নিরক্ষর ও লেখাপড়া না-জানা মায়ের সংখ্যা কমছে। তথাপি স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত প্রাথমিক অথচ জরুরি কিছু ধারণার অভ্যাস গড়ে না-তোলার জন্য সমস্যার বীজ থেকেই যাচ্ছে। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার অভ্যাস গ্রামাঞ্চলে বেশির ভাগ পরিবারে নেই। ফলে, বিদ্যালয়ে এসেও সেই অনভ্যাসের দ্বারাই পড়ুয়ারা খাবার খায়। যদিও এখনও বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের জন্য পড়ুয়াদের খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার প্রয়োজনীয় সাবান একেবারেই দেওয়া হয় না। অথচ সরকারি বিভিন্ন দফতরে টাকা খরচ না-করে ফেলে রাখা হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলিতে বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে প্রয়োজনীয় শৌচাগার নির্মিত হলেও সেগুলি ব্যবহার করতে না-পারার জন্য নোংরা জঞ্জালের স্তূপ জমে পড়ে আছে, এমন নজির প্রচুর। শৌচাগার ব্যবহার করার পদ্ধতি বাড়ি থেকেই শেখানো হয় না বহু ক্ষেত্রে। ফলে, বিদ্যালয়ে সেগুলি পরিষ্কার রাখা খুবই কষ্টকর।
নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রচুর টাকা খরচ করে প্রতিটি বাড়িতে বাধ্যতামূলক ভাবে পঞ্চায়েত শৌচাগার তৈরি করেছে। অথচ অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত বেষ্টনী না-থাকায় এবং বহু ক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যবহার না-করায় ইঁদুরে মাটি ফেলে শৌচাগারের গর্ত ভরাট করে দিয়েছে। অনেকে আবার খোলা মাঠে নির্লজ্জ ভাবে কানে মোবাইল নিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করতেই ভালবাসেন।
স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত প্রচারের জন্য সাধারণ ভাবে টিভি, সংবাদপত্র প্রভৃতিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্তরে নিবিড় প্রচার ও সচেতনার কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার। বিশেষ করে ১১-১৪ বছর বয়সের ছাত্রীদের ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রাক্মুহূর্ত থেকে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা দরকার। কারণ, গরিব ও স্বল্প সচেতন পরিবার থেকে আগত ছাত্রীরা এই সময়ে সঠিক পরামর্শ ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে কোনও জ্ঞান বাড়িতেও পায় না, বিদ্যালয়েও নয়। ইদানীং স্বাস্থ্য দফতর ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানোর দায়িত্ব বিদ্যালয়ের উপর চাপিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে প্রচার মাধ্যমে উঠে আসছে, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ছাত্রীরা অনেকে ওই ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে বা বমি করছে। চিকিৎসকদের মতে, এটা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ঘটনা ঘটছে, এ কথা সত্য। দেখা যাচ্ছে, নানা কারণে ভয়ে এবং সচেতনতার অভাবে ওই ট্যাবলেট অনেকেই খাচ্ছে না। স্বাস্থ্য সচেতনার সামগ্রিক বিষয়গুলি বিদ্যালয় স্তরে প্রচারের দায়িত্ব স্বাস্থ্য দফতরের নেওয়া দরকার। আর, মিড ডে মিল শুরু হলেও এখনও কেন বিদ্যালয়গুলি সাবান, ব্লিচিং পাউডার, বিশুদ্ধ পানীয় জল, শৌচাগার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রভৃতির জন্য অর্থ পায় না?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.