শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে ভরা মরসুমে চা বাগানে তালা ঝুলিয়ে চলে গেলেন কর্তৃপক্ষ। রবিবার সকালে ডুয়ার্সের বীরপাড়ার দলমোড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলিয়ে বাগান ছাড়েন। গত সেপ্টেম্বর থেকে টানা নভেম্বর মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকার পর ফের কাজকর্ম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। ফের শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে মালিকপক্ষ বাগান ছাড়ায় মাথায় হাত পড়েছে চা বাগানের ১১০০ জন শ্রমিক এবং তাঁদের পরিজনদের। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে সমস্যা হলে প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তার হবে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি। যাতে দ্রুত বাগান চালু হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা করছি। “বাগানে অশান্তি সৃষ্টির জন্য চার শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে বহিষ্কার করেন। তাদের কাজে ফেরানোর দাবিতে প্রতিনিয়ত বাগানের ম্যানেজারকে ঘেরাও করা হচ্ছিল। পরে ওই শ্রমিকদের ফের কাজে নেওয়া হলেও অশান্তির জেরে কর্তৃপক্ষ বাগান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।” বর্তমানে মূলত মোর্চার নিয়ন্ত্রণে থাকা বাগানের শ্রমিক নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আরএসপি। দলের চা শ্রমিক নেতা গোপাল প্রধানের কথায়, “বাগানের শ্রমিকদের একাংশকে কারখানায় কাজে লাগানো হয়েছিল। ওই শ্রমিকেরা কেন কারখানায় কাজ করতে যায় তা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মোর্চা সমর্থক ৪ জন তাঁদের উপর আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। সাময়িক ভাবে কাজ থেকে তাদের বসিয়ে দেওয়া হয়। তাতে তারা ফের ঝামেলা সৃষ্টি করছিল। এই কারণে কর্তৃপক্ষ বাগান বন্ধ করে দিয়েছেন। সাধারণ চা শ্রমিকরা তাতে বিপাকে পড়লেন।” কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠন এনইউপিডব্লু-র নেতা মনি ডারনাল বলেন, “এ ভাবে বাগান বন্ধ করা ঠিক নয়। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বাগান বন্ধ হলে আগামীতে নতুন উদ্যোগীরা চা বাগানের ব্যাপারে আগ্রহ হারাবেন। তা ভাবতে হবে। শ্রমিকরা অশান্তি সৃষ্টি করবেন এটা কাম্য নয়।” মোর্চা নেতৃত্বের অভিযোগ, চা বাগান কর্তৃপক্ষ ১৯৫২ সালের আইন মানছেন না। আট ঘণ্টার বদলে তারা শ্রমিকদের ১০ ঘণ্টা ধরে কাজ করাচ্ছেন। আগের বকেয়া মজুরি মেটাচ্ছে না। ডুয়ার্সের মোর্চার নেতা মধুকর থাপা বলেন, “বাগানের সমস্যা ওই সমস্যা নিয়ে আমরাকিছুই জানি না। অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারতেন কর্তৃপক্ষ। বাগান বন্ধ করে শ্রমিকদের বিপদে ফেলার কোনও মানে হয় না। এই সমস্যার ব্যাপারে আমাদের জানালে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করতে পারতাম।” |