জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক
রাতে হস্টেলের বাইরে যাওয়া রুখতে নির্দেশ
রাতে নির্দিষ্ট সময় পর হস্টেলের বাইরে ছাত্রদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া নির্দেশ দিল জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ নোটিশ দিয়ে জানিয়েছেন রাত সাড়ে ৮ টার পর কোনও ভাবেই বাইরে থেকে হস্টেলে ঢোকা বা হস্টেল ছেড়ে বাইরে ছাত্ররা যেতে পারবে না। রাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সঙ্গে হস্টেলের কিছু ছাত্রর আড্ডা জমে ওঠে বলে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকী সেখানে নেশাজাতীয় সামগ্রী সরবরাহ হয় বলেও অভিযোগ। ছাত্রদের মধ্যে কে বা কারা ওই ধরনের আড্ডায় যায় সে ব্যাপারে নজরদারির চালানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু নন্দন মৈত্র বলেন, “রাত সাড়ে ৮টার পরে কোনও ভাবেই হস্টেলে ঢোকা বা বের হওয়া যাবে না. বলে ইতিমধ্যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে এবং দুপুরে হস্টেলে নজরদারির জন্য শিক্ষকদের নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে।” ছাত্রদের একাংশের অবশ্য দাবি, বহিরাগতদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেওয়ায় তারা জড়িত নয়। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সবুজ বিশ্বাসের দাবি, “পাশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশপ্রহরী এবং বহিরাগতরাই রাতের বেলায় আমাদের ক্যাম্পাসে এসে হস্টেলের কাছে থাকা একটি সেতুতে আড্ডা দেয়। তাঁদের সঙ্গে ছাত্রদের কোনও সম্পর্ক নেই। ছাত্ররা কোনও প্রয়োজনে রাতে অনেক সময় হস্টেল থেকে বের হতে পারে। তবে তারা কেউ ক্যাম্পাসে নেশা করে বলে আমাদের জানা নেই।”
সমস্যা নিয়ে আজ, সোমবার কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র। জেলাশাসক বলেন, “অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। কারিগরি শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার সুগত সেন জানান, পুলিশের পক্ষে কলেজ ক্যাম্পাসে নজরদারি চালানোয় সমস্যা রয়েছে। কলেজ কতৃপক্ষকেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তিনি অনুরোধ করেছেন। তবে কলেজ লাগোয়া বিভিন্ন দোকান এবং ধাবায় পুলিশি অভিযান চলছে বলে তিনি জানান। গত বুধবার গভীর রাতে কলেজ ক্যাম্পাসেই হস্টেলের ছাত্রদের সঙ্গে বহিরাগতদের সংঘর্ষ হয়। ছুরিকাহত হয় অন্তত ছয়জন ছাত্র। এর দু দিন পরে শুক্রবার রাতে কলেজের সামনেই এক ছাত্রের উপর খুর নিয়ে হামলা চালায় একদল বহিরাগত যুবক। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে দুটি ঘটনাতেই যে বহিরাগতদের সঙ্গে গোলমাল বেঁধেছে তাঁদের সঙ্গে কিছুদিন আগেও ছাত্রদের সম্পর্ক ভাল ছিল। ছাত্রদের ওপরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কলেজ লাগোয়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা এবং পাশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশপ্রহরী-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের কাছে ধৃতদের অনেকেই ছাত্রদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেছেন। ধৃতদের কেউ কেউ গভীর রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রদের সঙ্গে একসঙ্গে নেশা করেছেন বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন। কলেজেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলে কোনও নৈশ প্রহরী না-থাকায় রাতের বেলায় তারা খুশি মতো হস্টেল থেকে বেরিয়ে ক্যাম্পাসে যত্রতত্র অবাঞ্ছিত কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ একটি হস্টেল লাগোয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাস। ওই হস্টেলের সামনে একটি সেতুতে নিয়মিত গভীর রাতে ছাত্রদের আড্ডা চলত বলে অভিযোগ। বহিরাগতদের মাধ্যমে ওই আড্ডাতে অবাধে নেশার সামগ্রী সরবরাহ হওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমনকী মাঝেমধ্যেই আসরে সামিল হতেন বহিরাগতরা। সেখান থেকেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বচসার শুরু হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ মনে করছে, হস্টেলের ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের একাংশের অবাধ মেলামেশাই কাল হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দুটি ঘটনার মূল কারণ সেটাই। শুক্রবার কয়েকজন বহিরাগত যুবক কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের উপর খুর নিয়ে হামলা চালায়। অভিযোগ কিছুদিন আগে কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের তহবিলের ভাগ দাবি করে বহিরাগত যুবকেরা। সে কারণে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও বহিরাগতদের যোগাযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অভিযোগ, কলেজ লাগোয়া এলাকার কিছু দোকান বা ধাবা থেকে নিয়মিত নেশার সামগ্রী সরবারহ করা হয় ছাত্রদের কাছে। ওই সমস্ত দোকান মালিকদের সঙ্গেও ছাত্রদের যথেচ্ছ মেলামেশা রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.