মুখ্যমন্ত্রী ও এসপি-র বিরুদ্ধে তোপ অধীরের
মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসকে ‘ধ্বংস করতে’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তুললেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে অধীরবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জেলা কংগ্রেসকে ধ্বংস করতেই এই পুলিশ সুপারকে পরিকল্পনা করে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে জেলা কংগ্রেসকে দুর্বল করা যাবে না।”
অধীর বলেন, “সরকার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুর্শিদাবাদ ক্যাম্পাসের জমি সমস্যা মেটাতে পারছে না। এদিকে ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ এসে পড়ে রয়েছে আর অস্থায়ী ক্যাম্পাসের ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে।” একই ভাবে নসিপুর রেল সেতু কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও জমি জটিলতায় তা আটকে রয়েছে। ওই সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু হলে উত্তর ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। জেলার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ঘটবে। অন্য রাজ্যে রফতানির সুযোগ বাড়ার ফলে ফসলের দাম পাবেন এলাকার চাষিরা। কিন্তু রেল ও রাজ্য সরকার তা মেটাতে পারছে না বলেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অধীর।
অধীর এদিন মুর্শিদাবাদে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা খোলার দাবি জানান। তাঁর কথায়, “এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের মসিহা হওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্য দিকে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে একের এক প্রকল্প গলা টিপে হত্যা করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে জেলা কংগ্রেস।”
অধীর বলেন, “পুলিশ সুপার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ত্ব করছেন। জেলা কংগ্রেসকে শেষ করতে এর আগে সিপিএম জ্ঞানবন্ত সিংহকে ব্যবহারের চেষ্টা করে। কিন্তু তার ফল ভাল হয়নি। ক্ষমতা দখল করে তৃণমূলও একই ধ্বংসাত্মক খেলায় মেতেছে। তার ফলও ভাল হবে না। জেলাবাসী তার উত্তর দেবেন।” গত ১৯ জুন নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রেজাউল হক এবং শিবপুর পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আবদুল হান্নান দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন। ওই ঘটনায় প্রকৃত দোষী এক জনও গ্রেফতার হয়নি বলে অধীরের দাবি। তিনি বলেন, “উল্টে পুলিশ মৃত ব্যক্তির ভাইপোদের গ্রেফতার করেছে।”
অধীরের অভিযোগ, “কংগ্রেস কর্মীদের গ্রেফতার করে তাঁদের কাছ থেকে জাল টাকা, হেরোইন, গাঁজা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে পরিকল্পনা করে মিথ্যা মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ। আমার জানতে ইচ্ছে করেএত জাল টাকা, গাঁজা এসপি পাচ্ছেন কোথা থেকে?” তাঁর কথায়, “বর্ধমানে থাকাকালীন কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। এখানেও কি তিনি জাল টাকা ও গাঁজা কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন?”
তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বেআইনি ভাবে পুলিশের নিরাপত্তা দিচ্ছেন বলেও এসপি-র বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ। অধীর বলেন, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে খোদ পুলিশই। এ নিয়ে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকেই বিষয়টি আমি জেনেছি।” এমনকী বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের ডেকে এনে পুলিশ সুপার তৃণমূল করার টোপও দিচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য বলেন, “মাননীয় সাংসদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটুকু বলতে পারিআমি এ জেলার পুলিশ সুপার হয়ে আসার পরে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে মুর্শিদাবাদ প্রথম হয়েছে। এছাড়াও হেরোইন-গাঁজা-জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে শুরু করে সীমান্তে গরু-সহ বিভিন্ন পাচার বন্ধ করে দিয়েছি। খুন-সন্ত্রাসের ঘটনা কমে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক দাগী আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আর আমার কাছে সমস্ত অপরাধী এক। ধৃতদের বিরুদ্ধে যে মামলা প্রয়োগ করা প্রয়োজন, আইনের মধ্যে থেকে পুলিশ তাই করছে।”
মৎস্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী তৃণমূল নেতা সুব্রত সাহা অধীরের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে এটা বুঝতে পেরেই তিনি এই ধরনের অভিযোগ তুলছেন, যার কোনও ভিত্তি নেই। তৃণমূলের আমলেই প্রশাসন নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে। এতে অনেকের অসুবিধা হচ্ছে জানি। কিন্তু আমরা প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভাবেই কাজ করতে দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.