বর্ষা আসিতেছিল না, তাহা এক রকম ছিল। কিন্তু যখন আসিল, রাজ্যবাসী তাহার মহিমায় একেবারে হতবাক্য। অফিস অঞ্চল যখন প্রবল বর্ষণে ভাসিয়া যাইতেছে, তখন মাইলখানেক দূরে বাড়ির পাড়া শুষ্ক। ফলে, কেন দেরি হইল, সেই প্রশ্নের উত্তরে গৃহিণীকে বৃষ্টির কথা বলিয়া অনেকেই অনৃতভাষণের দায়ে তিরস্কৃত হইতেছেন। তাঁহাদের দুঃখের কথা অবশ্য ভাবিয়া লাভ নাই, কারণ গৃহিণীর গঞ্জনায় হেতু লাগে না বর্ষা না হইলে অন্য কারণে তাঁহারা বকা খাইতেনই। বরং, এই অতিস্থানীয় বর্ষার মাহাত্ম্যবর্ণন করা যাউক। ভারত নামক দেশটি কেন্দ্রিকতার দোষে জর্জর। এই দেশে যাহাই হয়, কেন্দ্রের ইচ্ছায় হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের যে অধিকার থাকার কথা, তাহা নাই। কমিউনিস্ট পার্টি আবার আরও এক কাঠি আন্তর্জাতিক হুকুম না হইলে তাহার নড়িবার জো নাই। বর্ষা সেই খেদ মিটাইয়া দিয়াছে। এই পাড়ায় বৃষ্টি তো পার্শ্বের পাড়ায় নাই, স্থানীয় স্বশাসনের চূড়ান্ত। ইহাই ভবিষ্যতের পথ স্থাননির্ভর সিদ্ধান্ত। শহর জুড়িয়া একই সঙ্গে বৃষ্টি হইতে হইবে, এমন দিব্য কে দিয়াছে? বরং, প্রয়োজন বুঝিয়া, রাস্তার জলধারণের ক্ষমতা বুঝিয়া বৃষ্টির ইতরবিশেষ চাই। এই যে বিবেচনা, ইহাই ‘গ্লোবাল’ মঞ্চে ‘লোকাল’-এর অভ্যুদয়। তাহার জয় হউক। |