রাস্তার উপরে কয়েক মিটার অন্তর বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির জমা জলে সেই গর্ত ভরে গিয়ে পথচারীদের যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার কোথাও রাস্তার উপর থেকে কবেই উঠে গিয়েছে পিচ-পাথর। পুরুলিয়া-জামশেদপুর ও পুরুলিয়া-বোকারো জাতীয় সড়কের সংযোগকারী একমাত্র বাইপাস রাস্তা উইলকক্স রোডের এই বেহাল ছবি
এই রাস্তার ভুক্তভোগী ট্রাক-লরি চালকদের অভিযোগ, “সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে কমবেশি আধ ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে রাস্তাটি এমনই বেহাল হয়ে রয়েছে।” এখন এই বেহাল রাস্তায় ভারী যানবাহন নিয়ে যেতে তাঁরা নারাজ। অগত্যা তাঁরা ভারী যান নিয়ে পুরুলিয়া শহরের ভিতরের রাস্তায় ঢুকে পড়ছেন। শহরবাসীর অভিযোগ, এ কারণে যানজট ও দুর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে এই রাস্তা সংস্কারের দাবি উঠলেও সেই কাজ শুরু হয়নি বলে তাঁদের ক্ষোভ। |
গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে পুরুলিয়া শহরের নডিহা এলাকায় পাড়ার দোকান থেকে বিস্কুট কিনে বাড়ি ফেরার পথে লরি চাপা পড়ে এক বালকের মৃত্যু হয়। এরপরেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ভারী যানবাহন বাইপাস রাস্তা ব্যবহার না করে শহরে ঢুকে পড়ছে। তার ফলেই বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। ভারী যানবাহণ শহরে যাতে না ঢোকে তা নিশ্চিত করার দাবি তোলা হয়। সে দিন পুলিশ লাঠিচার্জ করে অবরোধ তোলে।
পুরুলিয়া শহরকে ছুঁয়ে উত্তরে জামসেদপুরের দিকে ও পশ্চিমে বোকারোর দিকে চলে গিয়েছে ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক। পশ্চিমের ওই রাস্তা বোকারো-ধানবাদ হয়ে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি শহরে মিশেছে। পুরুলিয়া শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে চাষমোড় থেকে দু’টি রাস্তা ভাগ হয়েছে। ফলে একদিকে ধানবাদ, বোকারো, রাঁচি, চাষ-চন্দনকিয়ারি। অন্য দিকে, আর এক ইস্পাতনগরী জামশেদপুর। তাই দিনভর এই রাস্তা ব্যস্ত থাকে। ভারী যানবাহনের চলাচল লেগেই রয়েছে। পুরুলিয়া শহরে যাতে ওই গাড়ির চাপ না পড়ে সে জন্য শহরের দুই প্রান্তের পুরুলিয়া-জামশেদপুর ও পুরুলিয়া বোকারো-- এই দুই রাস্তাকে জুড়তে উইলকক্স রোড নামে এই বাইপাস রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল।
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, “এই বাইপাস রাস্তা যান চলাচলের যোগ্য থাকলে ভারী যানবাহন শহরে ঢুকত না। কিন্তু পূর্ত দফতর এই রাস্তা সংস্কার নিয়ে উদাসীন।” তাঁর দাবি, অবিলম্বে তাঁরা পূর্ত দফতরকে এই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হতে বলেছেন। পূর্ত দফতরের পুরুলিয়া জেলার কার্যনিবাহী বাস্তুকার অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, “ওই রাস্তাটি সংস্কার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। টেন্ডারও ডাকা হয়েছে।” পূর্ত দফতরের বর্ধমান ক্ষেত্রের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র জয়ন্ত সিংহ বলেন, “আমরা ওই রাস্তাটির টেন্ডার সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছি। শীঘ্রই কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।” |