|
|
|
|
পলিটেকনিকে হামলা |
এক ছুরিকাহত ছাত্র ভর্তি নার্সিংহোমে, ৮ নৈশপ্রহরী-সহ ধৃত ১০ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রদের ওপরে হামলা চালানোর অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ওই সন্দেহভাজনদের পুলিশ ধরেছে। তাঁদের মধ্যে ৮ জন পাশের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশ প্রহরী এবং একজন এলাকার বাসিন্দা। নৈশ প্রহরীরাও কলেজ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের মধ্যে তিন জনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। এদিন বিচারক শর্মিষ্ঠা গঙ্গোপাধ্যায় তিন জনকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২ অগস্ট জখম ছাত্রদের মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং মামলার কেস ডায়েরি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বুধবার রাতে দুটো নাগাদ পলিটেকনিক কলেজের ক্যাম্পাসেই ছাত্র এবং বহিরাগতদের সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, বহিরাগত একদল যুবক ছাত্রদের ওপরে ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। ঘটনায় ৬ ছাত্র ছুরিকাহত হয়। তাঁদের মধ্যে দু জনকে সঙ্কটজনক অবস্থায় শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, বুধবার গভীর রাতে পলিটেকনিক কলেজের কিছু ছাত্রদের সঙ্গে প্রথমে পাশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশ প্রহরীদের গোলমাল বাঁধে। পরে পলিটেকনিকের হস্টেল থেকে বেশ কিছু ছাত্র বেরিয়ে এলে নৈশ প্রহরীরা মোবাইলে ফোন করে বহিরাগত কিছু যুবকদের ডেকে আনেন। নৈশ প্রহরীরাও কলেজ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় আশেপাশের যুবকেরা সকলেই তাঁদের পরিচিত। বহিরাগত যুবকেরা এলে নৈশপ্রহরীরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও পলিটেকনিক কলেজের মাঝে থাকা সাধারণ সীমানা প্রাচীরের গেটের তালা খুলে দেয়। বহিরাগত যুবকরা পলিটেকনিকের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। গ্রেফতার করা হয়েছে সাবু রায় নামে এক বহিরাগতকে। যাঁর নেতৃত্বে হামলা হয় বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। তবে ধৃতদের অন্যতম আইনজীবী অভিজিত সরকার দাবি করেন, “ধৃতদের কেউই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। তাঁদের নামে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” পাশাপাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশ প্রহরীরা গোলমালে জড়িয়ে পড়ায় এবং রাতে বহিরাগতরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাস ব্যবহার করে পলিটেকনিক কলেজে যাওয়ার অভিযোগে উদ্বিগ্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ জ্যোর্তিময় ঝম্পটি বলেন, “যে বেসরকারি সংস্থার নৈশ প্রহরীরা কলেজে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে তাদের কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছি।” এদিকে, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়াতে শুক্রবার বিকেলে কমলেশ বিশ্বাস নামে তৃতীয় বর্ষের পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রকে শিলিগুড়ির নার্সিংহোম থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। অন্য ছাত্র তন্ময় দালালের পেটে গভীর ক্ষত রয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। এদিন সকালে তন্ময়ের বাড়ির লোকেরা বসিরহাট থেকে শিলিগুড়িতে পৌঁছেছেন। পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু নন্দন মৈত্র বলেন, “একজন ছাত্রকে নার্সিংহোম থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। অন্যজনের শারীরিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বুধবার রাতের ঘটনাটি নিয়ে জেলা শাসক সহ কারিগরি শিক্ষার অধিকর্তাকে বিস্তারিত জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|