হট্টগোলের অভিযোগে ধমক দিয়ে ক্লাস থেকে কয়েকজন ছাত্রকে বের করে দিয়েছিলেন একজন শিক্ষিকা। ‘বদলা’ নিতে দিদিমনির বাড়িতে চড়াও হয়ে ‘মল ও গোবর’ ছোঁড়ার অভিযোগ উঠলো ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের চকভবানি এলাকার ত্রিধারা পাড়ায়। শিক্ষিকার চিৎকারে পড়শিরা ছুটে গেলে হামলাকারী ছাত্রের দল পালিয়ে যায়। বালুরঘাটের ললিতমোহন আদর্শ হাইস্কুলের ভূগোলের শিক্ষিকা ছায়া দাস ও তাঁর পরিবার ওই ঘটনায় আতঙ্কিত। পুলিশের কাছে অভিযোগ না করলেও বৃহস্পতিবার ঘটনাটি নিয়ে স্কুলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযুক্ত একাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রকে চিহ্নিত করে তাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের নাম এই ঘটনায় উঠে আসায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ললিতমোহন আদর্শ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বয়সজনিত কারণে ছাত্ররা একটু চঞ্চল হয়। বোঝানোর মাধ্যমে তাঁদের শোধরানোর চেষ্টা হয়। এখন দেখা যাচ্ছে ওই ছাত্রদের বেপরোয়া মানসিকতার বদল হয়নি। অভিযুক্তদের আপাতত ক্লাস করতে মানা করা হয়েছে। অভিভাবকদের ডাকা হয়েছে।” স্কুল সূত্রের খবর, ওই স্কুলে ছেলেমেয়ে উভয়েই পড়ে। একদল ছাত্র বেপরোয়া হওয়ায় মেয়েদের প্রতি অশ্লীল কথাবার্তা বলার অভিযোগ মাঝেমধ্যেই ওঠে। বুধবার ভূগোলের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চলছিল। ওই সময় এক ছাত্র খাতা ও কলম ছাড়াই ক্লাসে ঢুকে পড়ে। অন্য ছাত্রদের কাছ থেকে জোর করে পেন্সিল, কলম, খাতা কেড়ে নিয়ে হট্টগোলা বাঁধায়। ক্লাসের শিক্ষিকা চেষ্টা করেও গন্ডগোল থামাতে পারছিলেন না। হইচই শুনে পাশের ঘর থেকে ছুটে যান শিক্ষিকা ছায়া দাস। তিনি ওই ছাত্রদের ধমক দিয়ে ক্লাস থেকে বের করে দেন। এ দিন শিক্ষিকা ছায়াদেবী অভিযোগ করেন, এর পরেই ওই ছাত্ররা আমাকে অশ্লীল গালাগালি দিতে থাকে। তিনি প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানালে অভিযুক্ত ওই ছাত্রকে ডেকে চরম ভতসনা করে ক্লাসে পাঠিয়ে দেন। শিক্ষিকা ছায়াদেবীর কথায়, “ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সন্ধ্যার পরেই ওই ঘটনা ঘটে।” তিনি বলেন, “ছেলেকে পড়াচ্ছিলাম। স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। বাড়ির সামনে রাস্তায় বেশ কিছু সাইকেল চলার শব্দ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাড়ির ভেতরের দরজায় বিকট আওয়াজ হতে ভয় পেয়ে যাই। এর পরেই আচমকা যেন ঘরে ক্যারিব্যাগের ঝড় ওঠে। গোবর ও অন্যান্য নোংরা ভর্তি ক্যারিব্যাগ ছুঁড়তে থাকে। প্রতিবাদ করতে যেতেই ওরা আমাকে লক্ষ্য করে নোংরা ছুঁড়তে থাকে। গোটা বাড়ি ও ঘর নোংরায় ভরে যায় চিৎকার করতেই ছাত্রের ওই দলটি সাইকেলে উঠে পালিয়ে যায়। রাতেই আক্রান্ত শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষক সহ সহকর্মীদের ফোনে ঘটনার কথা জানান এদিন স্কুলে ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় স্কুলের সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা ক্লাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন। |