গভীর রাতে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যেই বহিরাগতদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ে ৬ জন ছাত্র ছুরিকাহত হয়েছেন। বুধবার রাত ২টো নাগাদ জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজ চত্বরে ঘটনাটি ঘটেছে। রাতেই জখম ছাত্রদের জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জখমদের মধ্যে বসিরহাটের তন্ময় দালাল এবং ঠাকুরনগরের কমলেশ বিশ্বাস নামে তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্রকে ভোরে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দু’জনেরই অবস্থা সঙ্কটজনক। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে পলিটেকনিক কলেজ লাগোয়া এলাকা থেকে ৪ জনকে পুলিশ আটক করেছে। আটকদের মধ্যে দু’জন পাশের জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশপ্রহরী।
জলপাইগুড়ির ডিএসপি (সদর) হরিপদ শী এ দিন পলিটেকনিক কলেজের ক্যাম্পাস হস্টেলে গিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। হরিপদবাবু বলেন, “কলেজ ক্যাম্পাসে গভীর রাতে কীভাবে বহিরাগতেরা এল তা খতিয়ে
দেখা হচ্ছে। ছাত্রেরা রাতে হস্টেল ছেড়ে কেন বার হল দেখা হচ্ছে তা-ও।” |
নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন কমলেশ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে কার্তিক দাসের তোলা ছবি। |
পলিটেকনিকের ছাত্রদের অভিযোগ, রাতে ক্যাম্পাসের একটি গাছ থেকে কাঁঠাল পাড়তে যায় কিছু ছাত্র। সেই সময় পাশের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের চত্বরে থাকা কিছু বহিরাগত গালিগালাজ করতে শুরু করে। সেই খবর পলিটেকনিকের হস্টেলে পৌঁছলে ছাত্রেরা বেরিয়ে বহিরাগতদের আচরণের প্রতিবাদ করে। তার পরেই বাঁশ এবং ছুরি নিয়ে পলিটেকনিকের ছাত্রদের উপরে বহিরাগতেরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, কলেজ লাগোয়া বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গভীর রাত পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদের একাংশ নেশার আসর বসায়। সেই আসর থেকে মাঝেমধ্যেই গোলমালের শব্দ বাইরে থেকে শোনা যায়। তেমনই আসর থেকে বুধবার রাতে আশেপাশের লোকালয়ে ঢিল ছোড়া হয়। তার পরেই ছাত্রদের সঙ্গে গোলমালের সূত্রপাত। যদিও ছাত্রেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জলপাইগুড়িতে পলিটেকনিক এবং সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাস একেবারে গা ঘেঁষেই রয়েছে। পলিটেকনিক কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের হস্টেল এবং পাশের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাসের মধ্যে সীমানা প্রাচীরের মধ্যে একটি লোহার গেট রয়েছে। এই গেট দিয়েই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নৈশপ্রহরীদের মদতে বুধবার রাতে বহিরাগতেরা ক্যাম্পাসে ঢোকে বলে পলিটেকনিক ছাত্রদের অভিযোগ।
পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু নন্দন মৈত্র বলেন, “রাত দুটো নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। দু’জন ছাত্র আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিলিগুড়িতে ভর্তি রয়েছে। পলিটেকনিক কলেজের গেট দিয়ে বহিরাগতেরা ঢোকেনি। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দিক থেকেই তারা এসেছিল। বিষয়টি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি।” যদিও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ জ্যোতির্ময় ঝম্পটি বলেন, “কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের বেলায় বহিরাগতদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পাওয়ার পরে যা বলার বলব।” |