দীর্ঘ ১৫ মাসের বিরতির পর, আজ ফের গুয়াহাটি থেকে শিলং-এর উদ্দেশে উড়ল পবনহংস হেলিকপ্টার। তবে যাত্রী নিয়ে নয়। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমাকে নিয়ে গুয়াহাটি থেকে পাড়ি দেয় ওই সংস্থার হেলিকপ্টারটি। শীঘ্রই মেঘালয়ে যাত্রী পরিষেবাও শুরু করতে চলেছে তারা।
মেঘালয়, অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচপ্রদেশে একের পর এক দুর্ঘটনার পরে পবনহংসের বিরুদ্ধে রোষ চরমে ওঠে। গত বছর, ৩০ এপ্রিল সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে অরুণাচল ও মেঘালয় সরকার। কিন্তু যাত্রী পরিষেবা শুরুর জন্য মেঘালয় সরকার ফের যে দরপত্র আহ্বান করে। তাতে শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সব শর্ত মেনে একমাত্র পবনহংসই ‘পরীক্ষায়’ উৎরে গিয়েছে।
আজ গুয়াহাটির লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ বিমানবন্দর থেকে শিলং-এর উদ্দেশে পরীক্ষামূলক ভাবে উড়ে যায়, পবনহংসের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট ডফিন ৩৬৫ এন ৩। দিল্লি থেকে গুয়াহাটি ফিরে মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা নিজেই যাত্রী হিসেবে তাতে চড়ে বসেন। আপার শিলং-এ, সাতমাইল এলাকায় বিমান বাহিনীর ল্যান্ডি গ্রাউন্ডে কপ্টারটি অবতরণ করে। |
আর পুরোনো এমআই ১৭২ নয়, মেঘালয় সরকারের সঙ্গে নয়া চুক্তি অনুযায়ী, দুই ইঞ্জিনের ডফিন এয়ারো স্পেশাল ৩৬৫ এন ৩ হেলিকপ্টার, দক্ষ চালক ও কর্মী-সহ গুয়াহাটি বিমানবন্দরে হাজির করা হয়েছে। দুই চালক, দুই সহকারী ছাড়াও ১১ যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে এই হেলিকপ্টারটি। ইউরোকপ্টারের তৈরি এই হেলিকপ্টার ২০ হাজার ফুট উচ্চতা অবধি উড়তে সক্ষম। তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গেই চুক্তি করেছে পবনহংস। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে হেলিকপ্টার বাবদ মাসিক ৬২,৯৬,০০০ টাকা ভাড়া ও ঘণ্টাপ্রতি ফ্লাইং চার্জ ৬৩,১৬০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ বহন করবে কেন্দ্র। আপাতত গুয়াহাটি-শিলং-তুরার আকাশে উড়লেও পরে, জোয়াইকেও কপ্টারের রুটে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
অবতরণের পরে সাংমা বলেন, “আমাদের রাজ্য তথা উত্তর-পূর্বের পথ দুর্গম। সড়ক যোগাযোগে অনেক সময় লাগে। অন্তত রাজধানীগুলির মধ্যে জলদি যাওয়ার ক্ষেত্রে কপ্টারের কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু এখানকার আবহাওয়ার জন্য, নিরাপত্তার দিকটি সবার আগে ভাবতে হবে।”
তিনি আরও জানান, পবনহংসের পাশাপাশি রাজ্য সরকার নিজস্ব হেলিকপ্টারও কিনতে চলেছে। পবনহংসের চেয়ারম্যান অনিল শ্রীবাস্তব বলেন, “এ বার টেন্ডারের শর্তই ছিল ৫ বছরের বেশি পুরনো বা ৫০০০ ঘণ্টার বেশি ওড়া চপার গণ্য হবে না। তা মেনেই পবনহংস এগিয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও আপোস করা হবে না।” তিনি আরও জানান, শীঘ্রই মিজোরাম সরকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সে রাজ্যেও কপ্টার-পরিষেবা চালু করতে চলেছে তারা। সিকিম, ত্রিপুরা ও অয়েল ইন্ডিয়াতেও তাদের কপ্টারই চলে। অরুণাচলেও পরিষেবা শুরু করতে আগ্রহী পবনহংস। পবনহংসের ইউরোকপ্টার ডফিন এএস ৩৬৫ এন-৩-এর ছবিটি তুলেছেন উজ্জ্বল দেব। |