গুজরাত দাঙ্গা বিতর্ক
দোষী হলে ফাঁসি দিন, উর্দু দৈনিকে বললেন মোদী
গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই। বরং যদি দোষ প্রমাণ হয়, নরেন্দ্র মোদী চান, তাঁকে প্রকাশ্য রাস্তায় ফাঁসিতে লটকানো হোক, যাতে একশো বছর পরেও লোকে তা না ভুলতে পারে।
একটি উর্দু দৈনিকে মোদীর এই সাক্ষাৎকারকে ভোটের কৌশল বলেই বর্ণনা করছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। ছ’মাস পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের সেই দাঙ্গা প্রসঙ্গ নিয়েই রাজনৈতিক তরজায় জড়ালেন মোদী এবং কংগ্রেস।
গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার ঘটনায় তিনি যে নির্দোষ, তা এর আগেও একাধিক বার দাবি করেছেন নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি লক্ষণীয় ভাবে সেই একই কথা তিনি বলেছেন একটি উর্দু দৈনিকের সাক্ষাৎকারে। দৈনিকটির সম্পাদক প্রাক্তন সাংসদ, সমাজ পার্টির সদস্য শাহিদ সিদ্দিকি। সিদ্দিকি জানিয়েছেন, মোদীর সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই কথা হয়ে গিয়েছিল যে দাঙ্গা নিয়ে যথেচ্ছ প্রশ্ন তাঁকে করা হবে এবং মোদী মাঝপথে কথা থামিয়ে দিতে পারবেন না। মোদী সেই শর্তে রাজি হয়েই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গায় কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে মনমোহন সিংহ বা সনিয়া গাঁধীরা ক্ষমা চাইলেও গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে তিনি ক্ষমা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন মোদী। কেন? মোদী বলেছেন, “আমি কোনও ভাবেই ক্ষমা চাইতে রাজি নই। কারণ আমি নির্দোষ। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমায় যেন ফাঁসি দেওয়া হয়।” মোদীর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজনৈতিক সূত্র বলছে, আসলে এ হল মোদীর পেশি প্রদর্শনের রাজনীতি। তিনি এই কথা বলে কার্যত কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। গত দশ বছর ধরে কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনলেও একের পর এক অভিযোগ আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই মোদী এই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
একই কথা মোদী এর আগেও বলেছেন ঠিকই। কিন্তু ভোটের আগে যে ভাবে একটি উর্দু দৈনিকে ওই সাক্ষাৎকারটি দেওয়া হল, তার মধ্যে একটি পরিকল্পনার ছাপ রয়েছে বলে মনে করছে কংগ্রেস শিবির। দলের নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বল বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই মোদী এই মন্তব্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যদি থানা অভিযোগ নিতে না চায়, তা হলে মামলা হবে কী করে? মোদীর বিরুদ্ধে এখনও কিছু মামলা চলছে। সেগুলির নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কী ভাবে এক জন অভিযুক্ত নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে?”
কংগ্রেস মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় জবাব দিয়েছে বিজেপি শিবিরও। আজ রাজনাথ সিংহ বলেন, “মোদীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। তা সত্ত্বেও গত দশ বছর ধরে টানা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস। আসলে গুজরাত-সহ অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নতি কংগ্রেস সহ্য করতে পারছে না।” গুজরাত দাঙ্গায় মোদীর ভূমিকা নিরপেক্ষ ছিল না বিভিন্ন মহল থেকে এই অভিযোগ আসায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি ওই দল দাঙ্গা সংক্রান্ত একটি মামলায় মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে। রাজনৈতিক সূত্র মনে করছে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চান মোদী। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি যে প্রধানমন্ত্রী পদে দাঁড়াতে চান, এমন বার্তা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও সঙ্ঘ পরিবারকে ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন তিনি। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ ভোটের একটি বড় অংশের এখনও মোদীর নামে আপত্তি রয়েছে। তাই নিজেকে উচ্চগ্রামে নির্দোষ দাবি করে মোদী ধর্মনিরপেক্ষ ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিলেন। দলের সেই নিচুতলাকেও উজ্জীবিত করলেন, যাদের একটি বড় অংশ মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে দেখতে চান।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.