‘বড় দায়িত্ব’ দলে না সরকারে
লোকসভার নেতার পদেও উঠল রাহুলের নাম
রাজনৈতিক চিত্রনাট্য মেনেই এগোচ্ছে কংগ্রেস তথা ইউপিএ সরকারে ‘বড় দায়িত্বে’ রাহুল গাঁধীর অভিষেকের প্রস্তুতি।
আজ কংগ্রেসের দশ জন সাংসদ সনিয়া গাঁধীর কাছে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছেন, রাহুলকে লোকসভার নেতা নিযুক্ত করা হোক। প্রথম ইউপিএ সরকারের গোড়া থেকেই এই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এখন পদটি শূন্য। কংগ্রেস সাংসদদের যুক্তি, রাহুলকে এখন ওই দায়িত্ব দেওয়াটাই ‘সময়ের দাবি’।
দল ও সরকারে রাহুলকে গুরুদায়িত্ব দেওয়ার দাবি নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি সনিয়া নিজেও রাহুলকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলেন। যার পরে রাহুল নিজেই জানিয়ে দেন, তিনি তৈরি। এখন কোন দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হবে, তা ঠিক করবেন রাহুলের দুই ‘বস’ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী এবং প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। কিন্তু সে বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণার আগেই রাহুলকে একেবারে লোকসভার নেতা করার দাবি উঠে গেল। আজ সনিয়াকে যে দশ সাংসদ চিঠি লিখে এই দাবি জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে পি সি চাকো, ভক্তচরণ দাস, ফ্রান্সিসকো সার্ডিনহার মতো বর্ষীয়ান নেতারা রয়েছেন। আবার সঞ্জয় নিরুপমের মতো অপেক্ষাকৃত নবীন সাংসদও আছেন।
সাধারণত সরকারের কোনও প্রবীণ মন্ত্রীকেই লোকসভার নেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রণববাবুর অনুপস্থিতিতে সুশীলকুমার শিণ্ডের নাম এই পদের জন্য ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু রাহুলকে ওই পদ দেওয়ার দাবি তুলে পরোক্ষে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়ারও দাবি তুলে ফেলেছেন ওই দশ সাংসদ। এর আগে দিগ্বিজয় সিংহও একাধিক বার রাহুলকে গুরুদায়িত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছেন। সম্প্রতি সলমন খুরশিদও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন। সাংসদদের চিঠির প্রসঙ্গে আজ দিগ্বিজয় জানিয়েছেন, “রাহুলই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
কংগ্রেসের অন্দরমহলের অনেকের মতে, এই মুহূর্তে রাহুলকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ভার দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতেও চলে আসবেন। বিভিন্ন প্রতিরক্ষা চুক্তির অধিকাংশ কাজই শেষ। ফলে এ বিষয়ে কোনও বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
আবার কংগ্রেস নেতাদের অন্য এক অংশের যুক্তি, মনমোহন-সরকারের আট বছরের মাথায় মানুষের মধ্যে সরকার-বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। রাহুল মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে সরকারের ‘ব্যর্থতা’র দায় তাঁর মাথাতেও চাপবে। মূল্যবৃদ্ধি থেকে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য তাঁকেও দায়ী করবে বিজেপি। তাই এই নেতারা চান, রাহুলকে সংগঠনে সনিয়ার পরেই সবথেকে বড় পদটি দেওয়া হোক। সে ক্ষেত্রে অবশ্য দল ভোটে ব্যর্থ হলে ‘রাহুল ম্যাজিক’ নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু দিগ্বিজয় সিংহের মতো নেতারা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই নেতারা উঠে আসেন। ব্যর্থতার ভয়ে কেউ কোনও দায়িত্ব নেবেন না, এটা হতে পারে না।
এক কথায়, রাহুলকে সরকার বা দলে বড় দায়িত্বে (সে দায়িত্ব যা-ই হোক না কেন) আনাটা জরুরি বলে দলের অন্দরেই জোরালো দাবি উঠতে শুরু করে দিয়েছে। নেতারা বলছেন, এর ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনে ও সরকারের কাজে নতুন রক্তসঞ্চার হবে। বিরোধীরা যে দিকে ইঙ্গিত করে আক্রমণ শানাচ্ছে, সেই ‘পরিবারতন্ত্র’ মেনে রাহুলকে উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। বরং রাহুলকে নিয়ে আসার দাবি উঠছে দলের মধ্যে থেকেই। এই নেতাদের যুক্তি, পুরো ব্যাপারটা যদি ‘সাজানো’ হত, তা হলে অনেক সাংসদকে দিয়েই চিঠি লেখানো যেত। কিন্তু মাত্র দশ জন এই চিঠি লিখেছেন, এবং তাঁদের মধ্যেও জম্মু-কাশ্মীর থেকে কেরল, মহারাষ্ট্র থেকে ওড়িশা গোটা দেশেরই প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। নেতারা তাই বলছেন, রাহুলকে বড় দায়িত্বে আনার দাবি যে গোটা দেশেই রয়েছে, এটাই তার প্রমাণ। তা ছাড়া রাহুল নিজেও তো এখন দলের হাল ধরতে চাইছেন!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.