বিডিওকে রাস্তার হাল সরেজমিন খতিয়ে দেখতে হবে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে খানাখন্দে ভরা রাস্তার জমা জলে হাঁটতে কার্যত বাধ্য হলেন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল ময়ূরেশ্বর থানার মল্লারপুরে। মিনিট পাঁচেক বিডিও রাস্তার জমা জলে হাঁটেন এবং বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শোনেন। বিডিওকে রাস্তা দিয়ে হাঁটানোর পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা মল্লাপুরের বাহিনা মোড় সংলগ্ন এলাকায় অবরোধ করেন। রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর যাবত এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কার হয়নি। জায়গায় জায়গায় রাস্তার গর্তে হাঁটু সমান জল। বেহাল রাস্তার ফাঁপড়ে পড়ে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন নিত্যযাত্রী থেকে সকলেই। বাসিন্দারা জানান, বাহিনা মোড় থেকে হাজিপুর পর্যন্ত ১৯ কিমি রাস্তার ১০ কিমির বেশি অংশ বেহাল। অথচ রাস্তা সংস্কারের প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই এই অভিযোগে এ দিন বাহিনা মোড় ও আশপাশ এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ প্রায় দু’ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন। পাশাপাশি ধান চারা পুঁতে ও ছিপ ফেলে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। সেই সময় এলাকায় বিডিও পৌঁছলে তাঁকে জমা জলে হাঁটতে কার্যত বাধ্য করেন বাসিন্দারা। জলে হাঁটতে দেখে বাসিন্দাদের একাংশকে ‘বিডিও জিন্দাবাদ’ বলে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। |
অবরোধকারী প্রদীপ সিংহ, সুজয় মুখোপাধ্যায়, নিমনাথ সিংহরা জানান, বাহিনা মোড় থেকে কামরাঘাট ও হাজিপুরের উপর দিয়ে চলে যাওয়া এই রাস্তা দিয়ে মুর্শিদাবাদের কান্দি, বহরমপুরে সহজে পৌঁছনো যায়। এ ছাড়া, সাঁইথিয়া শহরে যেতে গেলে এই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি এই রাস্তার উপরে ৫-৬টি হাইস্কুল, পঞ্চায়েত ভবন, কানাচিতে বিএড কলেজ-সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস পড়ে। তাঁদের ক্ষোভ, “রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সম্প্রতি ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কোনও সুরাহা হয়নি। বছরের অন্য সময় তো দূর্ভোগ পোহাতেই হয়। বর্ষায় সেই সমস্যা আরও বাড়ে। মোটরবাইক, সাইকেল চালিয়ে যেতেও সমস্যা হয়। তাই বাধ্য হয়ে এ দিন অবরোধ করতে হয়েছে। বিডিও এলে হেঁটে রাস্তার রাস্তার অবস্থা দেখার দাবি জানিয়েছিলাম।” বিডিও বলেন, “রাস্তাটি জেলা পরিষদের। আমরাও ওয়াকিবহল আছি। রাস্তাটির আশু সংস্কারের প্রয়োজন। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে যাতে সংস্কার করা যায় সে জন্য মল্লারপুর ১ পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে সময় লাগবে। তাই সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করার জন্য জেলা পরিষদের নির্বাহী বাস্তুকার ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখান থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরে বাসিন্দাদের জানিয়েছি।” অতিরিক্ত জেলাশাসক জেলা (জেলা পরিষদ) বিধান রায় বলেন, “ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনে ১৮ লক্ষ টাকা জেলা পরিষদ ইতিমধ্যে ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য অনুমোদন করেছে। কাজের ওয়ার্ক অর্ডারও হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” |