চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ |
মহিলার মৃত্যুতে ভাঙচুর, বিক্ষোভ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পাথরপ্রতিমা |
এক মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বুধবার পাথরপ্রতিমা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর চালিয়ে চিকিৎসকদের ঘেরাও করল জনতা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেটের সামনে বিক্ষোভও চলে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। তবে, মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসায় গাফিলতির কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পাথরপ্রতিমার বিএমওএইচ কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, “মৃতার পরিবারের লোকজন কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। মৃতের দেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানা যাচ্ছে না।”
পুলিশ ও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ স্থানীয় মাধবনগর গ্রামের বাসিন্দা কনকবালা পাত্র (৩৫) নামে ওই মহিলাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরিবারের লোকজন চিকিৎসকদের জানান, খাটের নীচ থেকে নারকেল বের করার সময়ে কনকবালাদেবীকে কিছু একটা তাঁর ডান হাতের আঙুলে কামড়ায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তির ঘণ্টা খানেক পরে তিনি মারা যান। এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে শুরু হয় বিক্ষোভ। |
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কনকবালাদেবীকে সাপে ছোবল মারেনি। কিন্তু চিকিৎসক ভুল করে সাপে কাটার ওষুধ দেওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের স্বামী তপন পাত্র বলেন, “স্ত্রীকে কিছু একটা কামড়েছিল। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু এখানে ভুল চিকিৎসা করা হল। তাতেই স্ত্রী মারা গেল।” ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক শঙ্খনাদ পাল বলেন, “কীসে কামড়েছিল, ওই মহিলা বা তাঁর পরিবারের লোকজন বলতে পারছিলেন না। মহিলার দেহে সর্পদষ্ট হওয়াল লক্ষণ থাকায় আমি সেই সংক্রান্ত ইঞ্জেকশন দিই। তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বমিও করছিলেন। কিন্তু কিছু করার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগের গেট ও জানলার কাচ এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। হামলায় মৃতের পরিবারের লোকজনও ছিলেন বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের ঘেরাও করা হয়। ঢোলাহাট, পাথরপ্রতিমা এবং কাকদ্বীপ থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও কিছু ক্ষণের মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকের শাস্তি এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। তা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এর মধ্যে পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জনতা বাধাও দেয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে জনতাকে হটিয়ে দেয়। |