রোগী দেখতে দেরি, মারধর চিকিৎসককে |
রোগীকে দেখতে মিনিট দু’য়েক দেরি হয়েছিল। তার জেরেই বুধবার থানারপাড়ার নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক রামপ্রসাদ মল্লিককে মারধর করেন রোগীর আত্মীয়েরা। এ দিন সকালে গমাখালিতে দুর্ঘটনায় জখম হয় বছর চোদ্দর এক কিশোর। তাকে নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। খবর দেওয়া হয় রামপ্রসাদবাবুকে। রামপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘কয়েকজন এসে বলে তাদের রোগীকে তাড়াতাড়ি দেখতে হবে। আমি তখন অন্য বিভাগে রোগী দেখছিলাম। ঠিক মিনিট দুয়েকের মধ্যেই আমি যখন ওদের রোগীকে দেখতে যাই। রোগীর বাড়ির লোকজন অশ্লীল গালিগালাজ করে ঠেলে ফেলে দেয় আমাকে। মারধর করে। জরুরি বিভাগে ঢুকে ভাঙচুর করে। চিকিৎসার কোনও সুযোগ না দিয়েই ওরা ছেলেটিকে নিয়ে চলে যায়।’’ পুলিশের কাছে রামপ্রসাদবাবু একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরেক জানানো হয়েছে। এরকম চলতে থাকলে এখানে তো কাজ করাই মুশকিল হয়ে যাবে। এমনিতে মাত্র দু’জন চিকিৎসককে নিয়ে কাজ চালাতে হয়। আমরা আপ্রাণ ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অনেক সময়ে চিকিৎসককে টানা ৭২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। তারপরেও রোগীর বাড়ির লোকজন যদি চিকিৎসকদের মারধর করে, তা অমানবিক।” তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলব।’’
|
শিশু বদলের অভিযোগ রামপুরহাটে |
শিশু বদলের অভিযোগ উঠল রামপুরহাট হাসপাতালে। বুধবার বিকেলে রামপুরহাট থানার দখলবাটি গ্রামের খিয়াগড়িয়া পাহাড় এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মাল হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন। অভিযোগে প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী একটি সন্তানের জন্ম দেন। ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে লেখা আছে, তাঁদের শিশুপুত্র হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “কিন্তু পরের দিন আমাকে কন্যাসন্তান দেওয়া হয়।” প্রদীববাবুর স্ত্রী দিপালীদেবীর দাবি, “সন্তান হওয়ার সময়ে আমি অজ্ঞান ছিলাম। জ্ঞান ফিরতে আমাকে কন্যাসন্তান দেওয়া হয়।” যদিও ওই শিশুকে পরিবারের লোকজন বাড়ি নিয়ে চলে যান। ফিরিয়ে দেননি। ওই বধূর শাশুড়ি সন্তোষী মাল বলেন, “বৌমা মাড়গ্রামের নিঙহা গ্রামে বাপেরবাড়িতে আছে। চার দিন পরে ওখানে গিয়ে বাচ্চাটিকে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে প্রসবকালীন পরিহবণ পরিষেবা নেওয়ার জন্য গ্রামের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাই। সেখানে কাগজপত্র দেখালে জানতে পারি, পুত্র সন্তান হয়েছে বলে ওই কাগজে লেখা আছে। সোমবার হাসপাতালে গিয়ে অনেককে কাগজ দেখালে বলেন, কোথাও একটা ভুল হয়েছে।” হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি কয়েক দিন আগের। হাসপাতালের নথিপত্র খতিয়ে দেখা হবে।” তিনি অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, “একই দিনে অনেক রোগীর ডিসচার্জ সার্টিফিকেট লিখতে গিয়ে ভুল হয়ে থাকতে পারে। তবে সন্তান হওয়ার পরে মাকে শিশু দেখানো হয়। পরে ‘লগবুকে’ লিখে শিশুকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।”
|
রোগীর মৃত্যু, লাঠি নার্সিংহোমে |
এক প্রৌঢ় রোগীর মৃত্যুতে বুধবার সন্ধ্যায় এন্টালি থানার সিআইটি রোডে একটি নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানো হয়। এন্টালি ও বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালাতে হয় পুলিশকে। এন্টালি থানায় নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেছেন মৃতের আত্মীয়স্বজন। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম বিশ্বনাথ মান্না (৫৫)। পটারি রোডের বাসিন্দা বিশ্বনাথবাবু জানবাজারের একটি দোকানে কাজ করতেন। কয়েক দিন ধরে পেটের অসুখে ভুগছিলেন। উচ্চ রক্তচাপও ছিল। এ দিন দুপুরে খেতে বসে তাঁর বমি হয়। তাঁর ছেলেরা তাঁকে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যান। অভিযোগ, কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও কোনও চিকিৎসক আসেননি। এক জন নার্সই বিশ্বনাথবাবুর চিকিৎসা করে চলেন। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ দেখা যায়, এক জন চিকিৎসক রোগীর হৃৎপিণ্ড ‘পাম্প’ করছেন। কিছু পরেই নার্সিংহোমের তরফে পরিবারকে জানানো হয়, রোগী মারা গিয়েছেন। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত জনতা নার্সিংহোম ভাঙচুর করে। দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
|
আগামী আর্থিক বছর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে বয়স্ক রোগীদের জন্য আলাদা বহির্বিভাগ এবং ওয়ার্ড চালু করবে স্বাস্ব্য দফতর। বুধবার বালুরঘাট হাসপাতাল পরিদর্শন করে ওই কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস। ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিট (আইটিইউ)-এর ৫টি শয্যা চালুর উদ্যোগ হয়েছে বলে তিনি জানান। অসিতবাবু সহ এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অসিতবাবু বলেন, “ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অফ ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের বিশেষ চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ির সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা চিহ্নিত হয়েছে।” হাসপাতালে পরিকাঠামোর উন্নতি, ইউনিটগুলি কার্যকর করার ক্ষেত্রে কি সমস্যা রয়েছে, তা দেখে যান প্রতিনিধিরা। |