বন্যপ্রাণীদের গতিবিধি জানতে এবং চোরাশিকারীদের ওপর নজরদারি চালাতে এ বার চালকবিহীন গোয়েন্দা-বিমান উড়বে কাজিরাঙার আকাশে। দেশের মধ্যে, কাজিরাঙাই প্রথম জাতীয় উদ্যান, যেখানে এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হবে।
বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি এবং চোরাশিকারিদের রমরমা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে সম্প্রতি রাজ্য সরকার, ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি ও ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কর্তারা বিশেষ বৈঠকে বসেন। সেখানেই চালকবিহীন বিমান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অসমের অরণ্যগুলিতে, বিশেষ করে বন্যার সময়, নজরদারি চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এইসময় একদিকে, প্রাণী-মৃত্যু বেড়ে যায়। অন্যদিকে, নজরদারি না থাকায় চোরাশিকারিরাও গন্ডার ও অন্যান্য প্রাণী হত্যার চেষ্টা চালায়। এই বছরের বন্যায়, কাজিরাঙায় ৬১১টি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। জঙ্গলের প্রত্যন্ত এলাকায় নজরদারির জন্য অতীতে, মানসে চালকবিহীন বিমান ওড়নোর পরিকল্পনা করা হলেও, তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ বার বন্যার পরে, এনটিসিএ কর্তৃপক্ষ এখানে চালকবিহীন বিমানের মাধ্যমে প্রাণীদের গতিবিধি ও অরণ্যে মানুষের গতিবিধির উপরে নজর রাখার সুপারিশ করেন। রাজ্যের বনমন্ত্রী রকিবুল হুসেনও সাগ্রহে রাজি হন। তিনি কাজিরাঙায় আধুনিক নজরদারি সরঞ্জাম ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেন। কাজিরাঙায় দূর অবধি ছবি তুলতে সক্ষম ডিজিট্যাল ক্যামেরা (ইলেকট্রনিক-আই) বসানোর কথা আগেই চূড়ান্ত হয়েছে। মন্ত্রী জানান, কাজিরাঙার বুক চিরে যাওয়া ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পাকাপাকিভাবে ‘স্পিড গান’ বসাবার কথাও ভাবা হয়েছে। এনটিসিএ সদস্যরা জানান, কাজিরাঙায় বিমান চালানোর বিষয়টি বাস্তবায়িত হতে অন্তত মাস ছয়েক সময় লাগবে। বিমানটি একবারে ৪ ঘণ্টা উড়তে পারবে। বিমানে লাগানো ক্যামেরায় ছবি দেখে, ব্যবস্থা নিতে পারবে কর্তৃপক্ষ। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। পূর্ব বোকাখাত ডিভিশনের ডিএফও দিব্যধর গগৈ জানান, বন্যার সময় প্রাণীদের গতিবিধির উপর নজর রাখা, চোরাশিকারিদের উপরে নজর রাখা-সহ নানা ধরনের কাজে, উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে এই বিমান। |