|
|
|
|
জলকষ্টের বিধানসভায় ভরসা এখন ‘জল-শোভন’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
পোশাকি নাম যা-ই হোক, আসলে আইনসভা। দেশের-দশের জন্য আইন প্রণয়নের পীঠস্থান। হাজার সমস্যা থেকে জনজীবনকে সুরাহা এনে দেওয়াই যে কাজের উদ্দেশ্য। জনজীবনের সেই হিতসাধন পরের কথা। আপাতত নিজেদের জীবন রক্ষা করতেই জেরবার রাজ্য আইনসভার কর্মী, বিধায়ক-সহ যাবতীয় পদাধিকারীরা!
কারণ, বিধানসভায় তীব্র জলকষ্ট! যে জলের অপর নাম জীবন! অবস্থা এমনই সঙ্গিন যে, বিধানসভায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলতে হয়েছে কেউ যেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত একটুও জল খরচা না-করেন!
বিধানসভার গভীর নলকূপ খারাপ হয়ে বিপত্তি বেধেছে বেশ কয়েক দিন। সঙ্কট কালে পরিস্থিতি সামাল দিতে সহায় হয়েছে কলকাতা পুরসভা। যে পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ডাক নামই ‘জল-শোভন’! পুরসভার পাঠানো জলের গাড়িই আপাতত বিপত্তারণ! চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত হতেই পারে। কিন্তু প্রয়োজন বিচারে মহার্ঘ!
পুরনো যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিয়ে গোলযোগ সারানোর চেষ্টা জারি রয়েছে। সেই চেষ্টায় কবে ফল মিলবে, চাতকের মতো সে দিকে তাকিয়ে শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে বিধায়কেরা! অপেক্ষায় কর্মীরাও। সেই সঙ্গেই কর্মীদের স্বস্তি এইটুকুই যে, এই মুহূর্তে বিধানসভা অধিবেশন চালু নেই।
তা হলে কী করে সামাল দিতেন,
বলা মুশকিল।
বিধানসভার সচিবালয়ের তরফে উপসচিব (প্রশাসন) মানিক রায় ঘটক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছেন, নিতান্ত প্রয়োজন বাদ দিয়ে বিধানসভায় কেউ যেন অতিরিক্ত জল খরচ না-করেন। হাইকোর্টের নলকূপ এবং পুরসভার পাঠানো জল দিয়ে আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে সচিবালয় সূত্রের বক্তব্য। মুখ্য সরকারি সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, বিধানসভার পাম্পের যন্ত্রপাতিও খারাপ হয়েছে। হাইকোর্টের দিক থেকে ভূগর্ভস্থ যে জল সরবরাহ ব্যবস্থা আছে, সেটা কাজ করছে না। মেরামতির কাজ চলছে।” কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, স্পিকার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে খোঁজ রাখতে হচ্ছে শোভনদেববাবুকে।
মুখ্য সচেতকের বক্তব্য, “অধিবেশন চললে পুরসভার দু’টো জলের গাড়ি লাগে। এখন একটা গাড়ি এনে কাজ চালানো হচ্ছে।” কংগ্রেসের এক বিধায়কের কথায়, “ভালই তো! কলকাতা পুরসভার মেয়র তো বিধায়কও বটে! তবে সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই।” বিরোধী বামফ্রন্টের এক বিধায়ক বলছেন, “কখনও কল খুলে দেখছি, ঘোলা জল পড়ছে। কখনও জলই নেই। কখনও জল ব্যবহারে কড়াকড়ি। সমাধান তো চাই-ই। তবে মেরামতির টাকা যাতে জলে না-যায়, সেটাও দেখা উচিত!”
সব চেয়ে করুণ অবস্থা বিধানসভার ক্যান্টিনের।
বাসন ধোয়ার জল, রান্নার জল, খাওয়ার জল এত কিছুর ব্যবস্থা করতে নাজেহাল দশা তাদের। কখনও সখনও বাসনকোসন বৃষ্টির জলে ফেলে রাখতে হচ্ছে তাদের! ক্যান্টিনের এক কর্মীর কথায়, “যাঁরা এখানে আসেন, জল নেই দেখে রেগে যান। অনেকে ফিরেও যান। প্রত্যেককে তো আমাদের অবস্থা বোঝাতে যাওয়া সম্ভব নয়। কবে যে
এই অবস্থা কাটবে!” |
|
|
|
|
|