কেউ গড়েছে ভূমিকম্প অ্যালার্ম। কেউ ডাকবাক্স অ্যালার্ম। কেউ এনেছে জল সংরক্ষণের মডেল।
দুর্গাপুরে সিধো কানহু স্টেডিয়ামে মহকুমা প্রশাসন আয়োজিত দু’দিনের এই বিজ্ঞান মেলায় যোগ দিয়েছিল মহকুমার প্রায় ৫০টি স্কুল। শহুরে এলাকার বাইরে কাঁকসা, দুর্গাপুর-ফরিদপুর, গলসি ব্লকের স্কুলপড়ুয়ারাও যে পিছিয়ে নেই তা-ই সেখানে প্রমাণ হয়ে গেল। মহকুমাশাসক আয়েষারানি এ বলেন, “কত মডেল ও পোস্টার ওরা করেছে। দেখার মতো।”
ভূমিকম্প অ্যালার্ম গড়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের প্রতাপপুর হাইস্কুল। দশম শ্রেণির কেয়া শ্যাম ও নবম শ্রেণির পাপ্পু মণ্ডল জানায়, বিশেষ ধরনের ‘সেন্সর’ ব্যবহার করা হয়েছে। সামান্য কম্পন হলেই তা ধরা পড়বে এবং ঘণ্টা বাজতে শুরু করবে। ওই ব্লকেরই লাউদোহা কালীতারা বিজয় ইনস্টিটিউটের পড়ুয়া রাহুল মণ্ডল, অর্পিতা মণ্ডলেরা তৈরি করেছে ঘুরন্ত স্পাই ক্যামেরা। ঘরের প্রতিটি অংশের ছবি দেখা যাচ্ছে টিভিতে।
চিঠি এল কি না জানতে প্রতি দিন বাড়ির সামনে রাখা ডাকবাক্স পরীক্ষা করতে হয়। কিন্তু যদি এমন ব্যবস্থা থাকে যাতে চিঠি এলেই বাজবে অ্যালার্ম? গলসি ১ ব্লকের শালডাঙা নেতাজি হাইস্কুলের সাথী ঘোষ, সুরজিৎ পাঁজারা গড়েছে তেমন এক অ্যালার্ম। বাড়ি ও জমিতে ব্যবহার্য রোজকার জল বা বৃষ্টির জল কী ভাবে সংরক্ষণ করে তা ভূগর্ভে পাঠানো যায় তার মডেল গড়েছে কাঁকসা বিরুডিহা হাইস্কুলের দীপাঞ্জন রায়, সুব্রত সরকারেরা। রান্নার গ্যাসের পাইপ ফুটো হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে মাঝে-মাঝেই। গ্যাস ‘লিক’ হলেই যাতে অ্যালার্ম বাজে, মানকর গার্লস স্কুলের সুদীপা গড়াই, প্রাচী করেরা বানিয়েছে সেই মডেল। গ্যাসের পাইপ ঢাকা হয়েছে অন্য পাইপ দিয়ে। তার গায়ে সুক্ষ্ম ছিদ্র। ভিতরের পাইপে ‘লিক’ হলেই বাইরের পাইপের সেই ফুটো দিয়ে বেরিয়ে আসবে গ্যাস। আর তার চাপেই বেজে উঠবে অ্যালার্ম। তবে অনুযোগ শোনা গিয়েছে মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে। কাঁকসা হাইস্কুলের শিক্ষক প্রসেঞ্জিৎ রায়ের আক্ষেপ, “সেভাবে প্রচার না হওয়ায় দর্শক এসেছে কম।” অনেক পড়ুয়াও একই কারণে হতাশ। আয়োজকদের দাবি, সমস্ত স্কুলে মেলার কথা জানানো হয়েছিল। তবু কেন এমন হল, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। মেলা শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। |