দীর্ঘদিন ধরে বেহাল ডায়মন্ড হারবার-২ ব্লকের বুনোরহাট মোড় থেকে ওএনজিসি মোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটি। উঠে গিয়েছে পিচ। বড় বড় গর্ত গোটা রাস্তা জুড়ে। বর্ষায় সেই সব গর্তে জল জমে ডোবার চেহারা নিয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ছাত্রছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়েছেন কয়েক বার। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। অবিলম্বে রাস্তা সারানোর দাবি তুলেছেন গ্রামবাসীরা।
দু’পাশে গাছপালা এবং খেতের মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তাটি। পাতড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্ব দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের। রাস্তায় অটোরিকশা, মোটরভ্যান, সাইকেল ভ্যান চলে। স্থানীয় কয়েকটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় প্রতিদিন। সব মিলিয়ে এই রাস্তা দিয়ে বাগদা, পূর্ব ভবানীপুর, আগ্নেশ্বর, মড়িগাছি, বেন্দাল-সহ ৮-১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। |
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, যত দিন যাচ্ছে রাস্তার অবস্থা তত শোচনীয় হচ্ছে। বিপজ্জনক হয়ে উঠছে যাতায়াত করা। ইতিমধ্যে ওই রাস্তায় বেশ কিছু অটো, মোটরভ্যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে দুর্ভোগ বেড়েছে গ্রামবাসীদের। তা ছাড়া, রাস্তায় কোনও আলো না থাকায় সন্ধ্যার পরে গ্রামবাসীদের যাতায়াতে সমস্যা আরও বাড়ে।
ওই রাস্তায় অটোরিকশা চালান জুমাত আলি শেখ। তাঁর কথায়, “প্রায় ৪-৫ বছর ধরে রাস্তার বেহাল অবস্থা। অটো একেবারেই চালানো যায় না। তবু, জোর করে চালাতে গিয়ে প্রতিদিন অটো যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। আগে এই রাস্তায় প্রায় ৩০টি অটো চলত। এখন ৬টি চলে। বেহাল রাস্তার কারণে বাকি অটো চলছে না।” ওই রাস্তায় মোটরভ্যান-চালক নুরবক্স সাহা বলেন, “এই রাস্তায় গাড়ি চালাই নেহাতই পেটের দায়ে। বেহাল রাস্তার কারণে অনেকেই মোটরভ্যান চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু সকলেই যদি বন্ধ করে দিই, তা হলে বহু মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বেন।”
পাতড়া পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তথা পাতড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার মণ্ডল বলেন, “রাস্তা সারানোর দাবি সব দফতরে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কিছুই হল না। এই রাস্তা পঞ্চায়েতের পক্ষে সারানো সম্ভব নয়।”
বিডিও তীর্থঙ্কর বিশ্বাস রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, “ওই রাস্তাটি সারানোর জন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে সাধাণ মানুষ একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছে। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। তা আমাদের তহবিলে নেই। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, “জেলা পরিষদের আওতায় থাকা সব বেহাল রাস্তাই পর্যায় ক্রমে সারানো হবে।” |