ডাম্পিং গ্রাউন্ড না-থাকায় নিকাশি নালা সাফাই অভিযানে নেমে বিপাকে পড়েছেন ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতের তরফে কর্মী নিয়োগ করে ঠেলা গাড়ি কিনে সাফাই অভিযান শুরু হয়। কয়েকদিন কাজ চলতে দেখা দেয় জঞ্জাল ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যা। পরিস্থিতি দেখে বাসিন্দারা ফের ডাম্পিং গ্রাউণ্ডের দাবি তুলেছেন। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা তৎপর না-হওয়ায় সমস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। যদিও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ময়নাগুড়ির বিডিও কল্যাণ বড়ুয়া বলেন, “ডাম্পিং গ্রাউণ্ডের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিছু জমি দেখাও হয়েছে। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের আপত্তির জন্য কাজ এগোয়নি। বর্ষার পরে ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ফের জমি দেখা হবে।” শহরের বাসিন্দারা অবশ্য ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের ওই বক্তব্য মেনে নিচ্ছেন না। তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, অন্তত ৫ বছর থেকে একই কথা বলা হচ্ছে।
বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠলে ওই কথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। অথচ সমস্যা বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের অভিযোগ, ময়নাগুড়ি শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ এবং থার্মোকলে ভরে গিয়েছে। অসম মোড়ের কাছে ধরলা নদী সংলগ্ন এলাকায় তুষের ব্যবসা শুরু হয়েছে। তুষ বাইরে পাঠাতে থার্মোকলের ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। অভিযোগ, তাঁরা অব্যবহৃত থার্মোকল ফেলে রেখে চলে যান। ফলে নদী, নলা থার্মোকলে ভরেছে। বিপর্যস্ত হয়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। ডাম্পিং গ্রাউণ্ড না থাকায় ওই জঞ্জাল বাইরে ফেলাও সম্ভব হচ্ছে না। ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা জানান, শহরের বড় অংশের জল ময়নাগুড়ি-জলপাইগুড়ি রাস্তার দু’পাশের খাল দিয়ে ধরলা নদীতে পড়ত। ওই সমস্ত খাল প্লাস্টিক ও থার্মোকলে ভরে গিয়েছে। এ ছাড়াও খাল বুঁজে দোকান গজিয়েছে। বাড়ির রাস্তা তৈরি হয়েছে। ফলে শহরের বড় অংশের জল বাইরে বার হতে পারছে না। শহরে যে সমস্ত পাকা নিকাশি নালা তৈরি হয়েছে সেগুলির পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। নিষিদ্ধ প্লাস্টিকে ভরে গিয়েছে বেশিরভাগ নালা। জঞ্জালের স্তুপ সেখানে। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার হাল ফেরাতে সম্প্রতি বিশেষ সাফাই অভিযানে নামেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জঞ্জাল ফেলার জায়গা না-থাকায় তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেক জায়গায় সাফাই কর্মীদের বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ বলেন, “নিকাশি নালাগুলি সংস্কারের পরে জঞ্জাল ফেলার জায়গা মিলছে না। সাফাই কর্মীরা বাধার মুখে পড়ছেন। এ ভাবে চলতে পারে না।” পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ রায় মনে করেন ডাম্পিং গ্রাউণ্ডের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি বলেন, “সমস্যা বুঝতে পারছি। কিন্তু পঞ্চায়েতের পক্ষে একা ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।” |