মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বর্ষার মরসুমে কোচবিহারে একশো দিনের কাজে গতি আনতে জব কার্ডধারীদের ‘গো-গ্রিন’ প্রকল্পের আওতায় আনতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ওই প্রকল্পে ব্লকের উপভোক্তাদের বন সৃজনের বন্দোবস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোচবিহারের নোডাল অফিসার অম্লান তালুকদার বলেন, “বর্ষায় বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করে একশো দিনের প্রকল্পে গতি আনতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের কথা মাথায় রেখেই গো-গ্রিন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।” কোচবিহার ১ ও ২, তুফানগঞ্জ ১ ও ২, মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ী ব্লকের বাসিন্দা ওই উপভোক্তাদের এক বিঘা জমিতে সবুজায়নের জন্য সরকারি বরাদ্দে মেহগনি, আকাশমণি, সুবাবুল ও ঘোড়ানিমের ২১৬টি করে চারা গাছ দেওয়া হবে। নিজের জমিতে ওই গাছ লাগানোর জন্য উপভোক্তারা ৬২ দিনের মজুরি ও খরচ মিলিয়ে গড়ে প্রায় ১৪ হাজার টাকা সাহায্য পাবেন।
বাকি ছয়টি ব্লক দিনহাটা ১ ও ২, সিতাই, শীতলখুচি, মাথাভাঙা ১ ও ২ ব্লকের ২৩০০ জন উপভোক্তাকে প্রায় অর্ধেক বিঘা জমিতে কলা চাষের জন্য একশটি করে চারা গাছের পাশাপাশি ২৭ দিনের মজুরি এবং খরচ মিলিয়ে ৮ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হবে। চলতি মাসেই কলার চারা বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। চলতি মাসে কোচবিহারে এসে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী। একশো দিনের প্রকল্পে গড়ে মাত্র ১৪ দিন কাজ হয়েছে শুনে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। আধিকারিকেরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানান, বর্ষায় বাসিন্দাদের হাতে টাকা কম থাকে। ওই সময়েও কাজ দেওয়ার পাশাপাশি জবকার্ডধারীদের কাজের দিন সংখ্যা বাড়াতে হবে। কোচবিহার জেলায় মোট জব কার্ড রয়েছে ৫ লক্ষ ৯২ হাজার পরিবারের হাতে। আগামী আর্থিক বছরে ৫ লক্ষ ৩২ হাজার পরিবারকে ওই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, ওই সব পরিবার পিছু ১২টি করে নারকেল, সুপারি, লিচু ও আমলকির চারাগাছ দেওয়া হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ওই চারা গাছ কেনা হবে। এ জন্য নির্দিষ্ট শ্রম দিবসের মজুরিও পাবেন উপভোক্তারা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্ষায় বিকল্প কাজের মাধ্যমে ১০০ দিনের কাজের গতি যেমন বজায় রাখা যাবে তেমন প্রত্যেকের স্থায়ী ও বিকল্প আয়ের দিশা দেখানো সম্ভব হবে। তুফানগঞ্জ-১ বিডিও তাপস সিংহরায় বলেন, “জুন থেকে আগস্ট রাস্তা তৈরি, পুকুর খনন, বালি উত্তোলন, মাটি কাটার মত কাজের সমস্যা রয়েছে। ওই প্রকল্পে বিকল্প কাজের সুযোগ মিলবে। গো-গ্রিন প্রকল্প নিয়ে আমরা আশাবাদী।” |