মন্ত্রকে অনুপস্থিত কৃষিমন্ত্রী
খরার ভ্রুকুটি থেকে বাঁচতে উদ্যোগী স্বয়ং মনমোহন
রাজনৈতিক মতভেদে কৃষি মন্ত্রকে আসছেন না শরদ পওয়ার। তাঁর অনুপস্থিতিতে শরিকি ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সমস্যা বাড়িয়েছে দেশের বর্ষা পরিস্থিতি। দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিস্থিতি এখন এমনই যে কম বৃষ্টিপাতের কারণে খরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় সংকট মোকাবিলায় আপৎকালীন ব্যবস্থার জন্য নিজেই সক্রিয় প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, বর্ষার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রক ও দফতরকে রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য আজ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১১ দফা কর্মসূচি তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের (পিএমও) তরফে আজ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় তহবিলের আওতায় ৪৫২৪ কোটি টাকা রয়েছে। প্রয়োজনে সেই তহবিলের সবটাই বিপর্যয় রোধে খরচ করা যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন, বর্ষা আসার পর থেকে দেশে স্বাভাবিকের তুলনায় গড়ে ২২% কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। কম বৃষ্টিপাতের কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর আশি লক্ষ হেক্টর জমিতে এখনও চাষ শুরুই করা যায়নি। চালের কম উৎপাদন পরে মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও, খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে সেই উপায় নেই বললেই চলে। সরকারের উদ্বেগের কারণ সেটাই। কারণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ কমলে তা মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। পিএমও সূত্রে বলা হচ্ছে, সে জন্য আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতে চাইছেন মনমোহন। চাল ও গমের দাম স্থিতিশীল থাকলেও চিনি, ডাল ও শাকসবজির দাম এখনই ঊর্ধ্বগামী। বিপিএল পরিবারগুলির জন্য ডালের দামের ভরতুকি বাড়ানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের তরফে মন্ত্রিসভার অর্থ বিষয়ক কমিটির কাছে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। যাতে শীঘ্রই অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। তবে শুধু খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতি নয়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমায় সরকারের অন্য উদ্বেগও রয়েছে। খাদ্য সুরক্ষা আইন পাশ করিয়ে আগামী বছর থেকে তা দেশ জুড়ে রূপায়ণ করতে চাইছে ইউপিএ সরকার। উৎপাদনে ঘাটতি হলে সরকারের প্রস্তাবিত সেই সামাজিক প্রকল্পের উপরে তার আঁচ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেন্দ্রের এক শীর্ষ নেতার কথায়, সংসদের অধিবেশন আসন্ন। অনাবৃষ্টি পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে আলোচনা হতে পারে। আবার এই অবস্থায় কৃষি মন্ত্রকে শরদ পওয়ারের অনুপস্থিতি নিয়েও বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে পারেন। সেই প্রেক্ষিতেও প্রধানমন্ত্রীর তৎপরতা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক কর্তা আজ জানান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, কর্নাটক, রাজস্থান ও গুজরাতের সৌরাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৭৫%। আবার, অতিবৃষ্টির কারণে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসম ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। তবে অসম ও উত্তরবঙ্গের বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলির জন্য বিশেষ প্রজাতির বীজ সরবরাহেরও ব্যবস্থা করছে সরকার। একই ভাবে ধান উৎপাদনে যাতে ঘাটতি না হয় সেজন্য উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা পঞ্জাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুনিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সচিবালয়ের এক কর্তা জানান, এই ১১ দফা কর্মসূচির রূপায়ণ ও রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য কৃষি মন্ত্রকের সচিবের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রক গোষ্ঠী গঠন করেছেন মনমোহন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ওই কমিটি প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.