ইউরোপে নতুন করে অনিশ্চয়তার মেঘ ঘনিয়ে আসা, এশীয় বাজারের পতন এবং দেশে আর্থিক সংস্কার নিয়ে হতাশার জেরে সোমবার সপ্তাহের প্রথম লেনদেনেই সেনসেক্স পড়ল ২৮১.০৯ পয়েন্ট।
সূচক এ দিন ফের নেমে এসেছে ১৭ হাজারের ঘরে। বাজার বন্ধের সময় তা দাঁড়িয়েছে ১৬,৮৭৭.৩৫ অঙ্কে, যা গত এক মাসে সবচেয়ে নীচে। গত শুক্রবার সূচক পড়েছিল ১২০.৪১ পয়েন্ট। ভারতের বাজারে মন্দা এবং ইউরোপের সঙ্কটের জেরে ইউরোর দামে পতনের প্রভাবে এ দিন ডলারে টাকাও পড়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয় মাসের শেষে তেল আমদানিকারীদের বাড়তি ডলারের চাহিদা। ফলে দিনের শেষে টাকা পড়ে যায় ৬৫ পয়সা। এক ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৫.৯৭ টাকা। যা গত তিন সপ্তাহে টাকার সবচেয়ে কম দাম। প্রসঙ্গত, এ দিন ডলারে ইউরোর দাম নেমে আসে গত দু’বছরের সর্বনিম্ন অঙ্কে। জাপানি ইয়েনের তুলনায় ইউরো ছিল গত ১২ বছরে সবচেয়ে কম।
প্রধানত স্পেনের অর্থনীতির পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠা এবং গ্রিসের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে ক্রমাগত আশঙ্কাই এ দিন ইউরোপ-সহ বিশ্ব বাজারের শেয়ার সূচকগুলিকে টেনে নামায়। বড় মাপের সরকারি ত্রাণ প্যাকেজ ছাড়া স্পেনের অর্থনীতিকে বাঁচানো যাবে না, এই খবরই প্রভাব ফেলে বাজারে। পাশাপাশি, এ দিন প্রকাশিত পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, স্পেনের আর্থিক বৃদ্ধির হার এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকে কমেছে ০.৪%। এশিয়ার বাজারগুলিরও হাল একই রকম ছিল। এর জেরে ভারতেও দাম পড়তে থাকে। তার সঙ্গে তাল রেখে নামতে থাকে সূচক।
তবে আন্তর্জাতিক প্রভাব ছাড়াও ভারতের শেয়ার বাজারের পতনের অন্যতম কারণ ছিল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। ইউপিএ সরকারের শরিক এনসিপিকে নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের রাজনীতিকে অনেকটাই অনিশ্চিত করে তুলেছে বলে মনে করছেন লগ্নিকারীরা।
পাশাপাশি, আর্থিক সংস্কারের ব্যাপারে ক্রমশ লগ্নিকারীদের মধ্যে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “আর্থিক সংস্কারের ব্যাপারে সরকার এখনও কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারল না। যা লগ্নিকারীদের মধ্যে আর্থিক সংস্কারের ব্যাপারে হতাশা সৃষ্টি করছে। তার প্রভাব পড়ছে বাজারের উপর।” ইউপিএ সরকারের সমর্থক সমাজবাদী পার্টি এবং বিরোধী দল সিপিএম খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব বাতিল করার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি তোলায় তারও বিরূপ প্রভাব বাজারে পড়েছে। এর জেরেই এ দিন খুচরো বিপণন সংস্থাগুলির শেয়ার দর দ্রুত পড়েছে। যেমন প্যান্টালুন্স শেয়ারের দাম পড়েছে ৬.৪২%, প্রভোগের ৮.৩১% এবং শপার্স স্টপের ৫%।
এ দিকে সংস্থায় অনির্দিষ্টকালের জন্য লক আউট ঘোষণা করার ফলে টানা পড়ছে মারুতি সুজুকির শেয়ার দর। এ দিনই সংস্থার শেয়ারের দাম কমে গিয়েছে ৫%। এই নিয়ে টানা ৩ দিন ধরে মারুতি শেয়ারের দাম পড়ছে। |