স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটের পরে তৃণমূলের দুই সমর্থককে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকেদের বিরুদ্ধে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
রবিবার বর্ধমান শহরে বিদ্যার্থী ভবন বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির ভোটে শহরের দুই তৃণমূল নেতা পরেশ সরকার ও খোকন দাসের অনুগামীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি খোকন দাসের গোষ্ঠীর প্রার্থীরা জয়ী হন। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই গোষ্ঠীর লোকেরা বিপক্ষের দুই সমর্থককে পেটায় বলে অভিযোগ। বড়নীলপুর শান্তিপাড়ার বাসিন্দা স্বরূপ ঘোষ ও সন্তোষ রায়কে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্বরূপের বাবা সুকুমার ঘোষ বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন, “বাড়ি ফেরার সময়ে সুকান্তপল্লির কাছে ২৫-২৬ জন দুষ্কৃতী লাঠি, রড, শাবল, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। মারের ছোটে আমার ছেলে ও তার বন্ধু মারা গিয়েছে পরে তারা পালায়। আমি গিয়ে ওদের বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাই।” জরুরী বিভাগে শুয়ে স্বরূপ অভিযোগ করেন, “খোকন দাসের অনুগামীরাই হামলা করেছে। আমাদের মারতে-মারতে তারা বলে, এক মাত্র খোকন দাসের দলই করা যাবে। অন্যথায় মার খেতে হবে।” |
পুলিশের কাছে খোকনবাবু ছাড়া পরিতোষ চক্রবর্তী, নিমাই তালুকদার, আশু দাস, অনিমেষ দত্ত, বিনয় মুন্সী, নেপাল সরকার-সহ ১৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। খোকনবাবু সপার্ষদ থানায় গিয়ে বসে থাকলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। মাস দেড়েক আগে নিজের পাড়া রথতলায় টিএমসিপি-র শহর সভাপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘরামিকেও মারধরের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। খোকনবাবুর দাবি, “পুলিশ আমাদের কিছু লোককে অনর্থক হয়রান করছে। সেই ব্যাপারেই থানায় গিয়েছিলাম। সুকান্তপল্লিতে কে কাকে আক্রমণ করেছে, তা আমি জানি না।” বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “খোকনবাবুর বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার তদন্তও চলছে। দুপুরে আমি থানায় ছিলাম না। সেই সময়ে হয়তো উনি এসেছিলেন। কেন তিনি থানায় এসে বসে রইলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
অপর গোষ্ঠীর নেতা পরেশবাবু বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম, ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রার্থী ঠিক করা হোক। কিন্তু কেউই আমাদের কথা শোননি। তার জেরে তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলেরই প্রার্থীদের ভোটযুদ্ধ হয়েছে। এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। আগেও দলের রাজ্যস্তরের নেতাদের বলেছি। কোনও কাজ হয়নি। আর কিছু বলব না।”
তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাসের বক্তব্য, “এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে। রাজ্যস্তরের নেতারা চুপ করে বসে নেই। তাঁরা সব খবরই পাচ্ছেন। সময় হলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |