সম্প্রতি এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে মালদহ জেলায় যত বিবাহ হয় তার ৪২ শতাংশ ক্ষেত্রে পাত্রীর বয়স ১৮ বছরের নীচে। যেখানে রাজ্যের গড় ২৪ শতাংশ। এই মেয়েদের অধিকাংশই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে মা হয়ে যাচ্ছে। ফলে অপুষ্ট শিশুর জন্ম হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে মা ও শিশুর মৃত্যুর হার।
একটু খোঁজখবর করলেই জানা যায় যে, বাল্যবিবাহের প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রধান কারণ পরিবারে বেশি সংখ্যক সন্তানের জন্ম। সঙ্গে যোগ হয় আর্থিক অস্বচ্ছলতা এবং শিক্ষার অভাব। ফলে তারা ওই সন্তানদের ন্যূনতম প্রয়োজনটুকুও মেটাতে পারে না। তাই কাঁধের বোঝা নামানোর মতো ছোটবেলায় বিয়ে দিয়ে হালকা হওয়ার চেষ্টা করে। সেই সব ছোট মেয়েরাই অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেয় বা শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। এ সবের সামগ্রিক পরিণতিতে মাঝে মাঝে শোনা যায় হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর খবর। ইদানিং কয়েকটি নাবালিকার বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর খবর পড়ে ভাল লাগল। কিন্তু এগুলি এখনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এই ধরনের প্রতিবাদ যত বেশি হবে ততই বাবা-মায়েদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটবে। আর তা শুরু হবে পরিবার ছোট রাখার চেষ্টার মধ্য দিয়ে। |
গ্রামে-গঞ্জে, নদীর ধারে, মাঠে-প্রান্তরে নির্জন স্থানে অস্থায়ী ভাবে কিছু লোককে বসবাস করতে দেখা যায়। প্লাস্টিকের ছোট ছোট ডেরা তৈরি করে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ওরা দিন কাটিয়ে দেয়। কিছু দিন কাটার পর আবার নতুন ঠিকানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ওরা যাযাবর। সকাল হলেই সবাই বেরিয়ে পড়ে কাজের সন্ধানে। কেই সাপ ধরে, কেউ মধু সংগ্রহ করে। কেউ আবার বক, শালিক, ঘুঘু ইত্যাদি পাখি শিকার করে। মহিলারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঁতের পোকা, কোমরের ব্যথা ইত্যাদির তাবিজ-কবচ বিক্রি করে। সন্ধে হলে যে যার মতো আবার ডেরায় ফিরে আসে। তার পর লতাপাতা, খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বক-শালিকের ঝোল রান্না করে পরমানন্দে ভোজন সম্পন্ন করে।
এ ভাবে তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। তাদের পূর্বপুরুষরাও একই ভাবে দিন কাটিয়েছে। দেশের অন্য সব মানুষ তাদের উন্নয়ন, পড়া, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত। ইচ্ছে মতো সরকারের কাছে তাদের দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিচ্ছে, হরতাল, অবরোধ আরও কত কিছু করছে। তখন যাযাবররা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করার জন্য হিমশিম খাচ্ছে। তবুও তাদের কোনও প্রতিবাদ নেই। নেই কোনও অভিমান বা ক্ষোভ। ওরা এতই সরল যে নিজেদের জীবনের সুখভোগ বা আনন্দের কথা ভাবে না।
যাযাবররা প্রতিবাদের ভাষা জানে না বলেই কি সরকার তাদের প্রতি উদাসীন? তাদের ছেলেমেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চৌকাঠ পর্যন্ত মাড়ায়নি। তারা অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান এই মৌলিক পরিষেবাগুলো থেকে বঞ্চিত। সর্বশিক্ষা অভিযান দেশের সব স্থানে চালু হলেও যাযাবর সম্প্রদায়ের কেউ সেই অভিযানে সামিল হল কিনা, তা দেখার কেউ নেই। অন্তত পক্ষে অন্ন-বাসস্থান-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য এই মৌলিক পরিষেবাগুলো যাতে তারা ঠিক মতো পায় সে ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। |
উত্তরবঙ্গের মানুষ গোয়া বা কর্নাটক যান। কিন্তু শীতের সময় ওই সব রাজ্যে যেতে ট্রেনে প্রচুর ভিড় হয়। হাওড়া থেকে গোয়া অমরাবতী এক্সপ্রেস সপ্তাহে মাত্র চার দিন যাতায়াত করে। ফলে ট্রেনে প্রচুর ভিড় হয়। সংরক্ষিত টিকিট কেটেও অসুবিধেয় পড়তে হয়।
ভবিষ্যতে শীতের সময় উত্তরবঙ্গের মানুষের সুবিধার্থে সপ্তাহে বাকি তিন দিন (যে তিন দিন হাওড়া থেকে গোয়া পর্যন্ত ট্রেন যায় না) কোচবিহার বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গোয়া পর্যন্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্যবস্থা করতে মাননীয় রেলমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাই। |