মন্দারমণিতে তলিয়ে গেলেন তিন মহিলা
ফোনে মেয়েকে সমুদ্রের গভীরে যেতে বারণ করেছিলেন বাবা। মেয়ে বলেছিল, ‘‘ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। দারুণ লাগছে।” কিন্তু সেটাই যে মেয়ের শেষ ফোন হবে কল্পনাও করেননি বারাসতের ১১ নম্বর রেলগেট এলাকার বাসিন্দা পঙ্কজ পাল।
শনিবার দুপুরে মন্দারমণির সমুদ্রেই স্নান করতে নেমে মারা গেলেন পঙ্কজবাবুর মেয়ে অঙ্কিতা পাল (১৫), ভ্রাতৃবধূ শেলি পাল (৪২) এবং শেলিদেবীর দিদির মেয়ে, কেষ্টপুরের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা ঘোষ (১৯)।
শেলি পাল অঙ্কিতা পাল প্রিয়াঙ্কা ঘোষ
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অঙ্কিতা বারাসত কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল। প্রিয়াঙ্কা উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়তেন। এ দিন ভোর সাড়ে ৬টায় ওই তিন জন-সহ দু’টি পরিবারের ১৪ জন মন্দারমণির উদ্দেশে গাড়িতে রওনা হন। দুর্ঘটনাটি ঘটে দুপুর আড়াইটে নাগাদ।
অঙ্কিতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেলে পৌঁছনোর পরেই সকলে সমুদ্রে স্নান করতে নামেন। এক দিকে পুরুষেরা স্নান করছিলেন। কিছুটা তফাতে ছিলেন মহিলারা। ঝড়বৃষ্টি এবং ভরা কোটালের কারণে সমুদ্র অশান্ত ছিল। সমুদ্র-সৈকতে থাকা ডাব-বিক্রেতারা এ ব্যাপারে সকলকে সতর্কও করেছিলেন। অঙ্কিতা এবং প্রিয়াঙ্কা হাত ধরে স্নান করতে নামে। বড় ঢেউয়ের মুখে পড়ে টাল সামলাতে না পেরে তলিয়ে যায় অঙ্কিতারা। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে তলিয়ে যান শেলিদেবীও। প্রিয়াঙ্কার দিদি নন্দিনী ঘোষ-সহ আরও কয়েক জনও তলিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়রাই কোনও রকমে তাঁদের উদ্ধার করেন। পরে তিন জনের দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ।
দুপুরেই দুর্ঘটনার খবর এসে পৌঁছয় বারাসতে। অঙ্কিতার বাবা পঙ্কজবাবু বলেন, “ভোর সাড়ে ৬টায় বাড়ির ১৪ জনকে মন্দারমণি যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুলে দিই। সাড়ে ১২টা নাগাদ মন্দারমণিতে পৌঁছে ওরা আমাকে ফোনও করে। তারপর দুপুর আড়াইটে নাগাদ দুর্ঘটনার খবর আসে। বেশ কয়েক বছর আগে স্ত্রী মারা গিয়েছেন। একমাত্র ভরসা ছিল অঙ্কিতা। সে-ও চলে গেল।” মন্দারমণি পৌঁছনোর পরে টেলিফোনে যে মেয়ের গলায় সমুদ্রে নামতে যাওয়ার উচ্ছ্বাস শুনেছিলেন পঙ্কজবাবু, দু’ঘণ্টার ব্যবধানে সেই মেয়েরই মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন। বলেন, “মেয়েকে ফোনে সমুদ্রের গভীরে যেতে বারণও করি। ও বলছিল, ‘ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে বাবা। দারুণ লাগছে’।” পঙ্কজবাবুকে ফোনে দুর্ঘটনার কথা জানান তাঁর ভাই প্রদীপবাবু। শেলিদেবী প্রদীপবাবুরই স্ত্রী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার লোকজন পঙ্কজবাবুর বাড়িতে ভিড় করেন। কয়েকজন রওনা হন মন্দারমণির উদ্দেশে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.