ধামাচাপা প্রণব প্রসঙ্গ
ভিএস-বিজয়ন দ্বন্দ্বে জেরবার কেন্দ্রীয় কমিটি
কেবারে সরাসরি দ্বৈরথ। এক দিকে ভি এস অচ্যুতানন্দন। অন্য দিকে পিনারাই বিজয়ন। কেরলের এই দুই নেতাকে নিয়ে ফের জেরবার সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। লাভের মধ্যে এর ফলে চাপা পড়ে গিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন ঘিরে বিতর্ক। যা নিয়ে কেরলের নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সরব হতে পারেন বলে আশঙ্কা ছিল দলে।
ভিএস-বিজয়ন কলহ থামাতে দিল্লিতে সিপিএমের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। গত কাল সারা দিন এই বিবাদ নিয়েই পলিটব্যুরোর বৈঠক চলে। কিন্তু সমাধানসূত্র না মেলায় ঠিক হয়, কেন্দ্রীয় কমিটিতে দু’জনের বক্তব্য শোনা হবে। আজ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হতেই পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন বিবদমান দুই নেতা। রাজ্য সম্পাদক বিজয়নের অভিযোগ, ভিএস দলকে নানা ভাবে বিপাকে ফেলছেন। বারবার সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি নিজেকে সংশোধন করছেন না। দলত্যাগী বিক্ষুব্ধ নেতা টি পি চন্দ্রশেখরণের খুনের পর ভিএস এমন অবস্থান নিয়েছেন যাতে দলের দিকেই সন্দেহের আঙুল উঠেছে। যার ফলে বিভিন্ন খুনের মামলায় রাজ্যের ডজন খানেক নেতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
অন্য দিকে বিরোধী দলনেতা ভিএসের অভিযোগ, রাজ্যে দলের দুর্দশার জন্য বিজয়নই দায়ী। তাঁর নেতৃত্বে সিপিএমের মধ্যে দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতি তৈরি হয়েছে। মানুষ তাই বিশ্বাস করছেন যে, যাঁরাই সিপিএমের বিরোধিতা করেন, তাঁদের মুখ বন্ধ করতে দল খুনের রাস্তায় হাঁটে।
পিনারাই বিজয়ন অচ্যুতানন্দন
বিজয়ন ও তাঁর অনুগামীরা চাইছেন, ভিএসের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির সিদ্ধান্ত হোক। তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বরখাস্ত করা হোক অথবা বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানো হোক। দু’টি একসঙ্গে হলেও আপত্তি নেই। কিন্তু কেরলে এখনও ভিএস-এর যে পরিমাণ জনপ্রিয়তা, তাতে এতটা কড়া সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন না সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁদের একটা বড় অংশের আশঙ্কা, সে ক্ষেত্রে দলে ফাটল আরও চওড়া হবে। দল দু’টুকরোও হয়ে যেতে পারে। জনমানসেও তাঁর প্রভাব পড়বে। সেই কারণে অনেকেই ভিএস-কে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে।
কিন্তু বিজয়ন কোনও ভাবেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর চাপ আলগা করছেন না। রবিবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষ হওয়ার পর সোমবার কেরলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার পরে দু’দিন রাজ্য কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট হাজির থাকবেন। তাঁকে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে হবে। ওই দুই বৈঠকেও ভিএস বিরোধিতা চালিয়ে যেতে চাইছেন বিজয়ন। এর পরে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিচু তলার নেতা-কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা থেকে শুরু করে শাখা স্তরেও সংগঠনের বৈঠক ডেকে রেখেছেন তিনি।
উল্টো দিকে ভিএস রয়েছেন নিজের মতোই। বিচলিত হওয়ার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না তাঁর হাবেভাবে। দিল্লি রওনা হওয়ার আগে তিরুবনন্তপুরমে জানিয়ে এসেছেন, “আমার মনে হয় না কেন্দ্রীয় কমিটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। যদি নেয়ও, সকলেই জানে, আমি এ সবে বিচলিত হওয়ার লোক নই।” তবে কেরলের এই বিবাদের মধ্যে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক কিছুটা ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থনের বিষয়ে কেরলের নেতাদেরই সবে চেয়ে বেশি আপত্তি ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আপাতত তাঁরা ভিএস-বিজয়ন দ্বন্দ্ব নিয়েই ব্যস্ত।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.