লক্ষ্য মেয়ের মন্ত্রিত্বও
চাপ বাড়িয়েও জোটেই থেকে গেলেন পওয়ার
র্ষণ কিন্তু গর্জনের মতো হল না। গত দু’দিন ধরে কংগ্রেস-বিরোধী অবস্থান নেওয়ার পরে আজ মহারাষ্ট্রে দলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। সেই বৈঠকের পরে প্রফুল্ল পটেল জানিয়ে দিলেন, “আমরা ইউপিএ-তেই আছি এবং ভবিষ্যতেও শরিক হিসেবে থাকব। কেন্দ্রের সরকার আমাদের সমর্থন পাচ্ছে, ভবিষ্যতেও পাবে।”
কেন ইউপিএ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন না শরদ পওয়ার?
এনসিপি সূত্রের বক্তব্য, এর প্রথম কারণ, পওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে। পি এ সাংমা এনসিপি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে তাঁর কন্যা আগাথাকে সরিয়ে সুপ্রিয়াকে মন্ত্রী করা হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। এখন ইউপিএ ছেড়ে গেলে সেটা সম্ভব হবে না। দ্বিতীয় কারণ, মহারাষ্ট্রের ভোটব্যাঙ্ক। মরাঠা ভোট ছাড়াও মহারাষ্ট্রে অনগ্রসর মুসলমান ও দলিতদের ভোট পওয়ারের ঝুলিতে আসে। ইউপিএ থেকে বেরিয়ে এলে সেই ভোট কংগ্রেসের দিকেই চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সর্বোপরি, কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগ করলে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তে গতি বাড়ানো হতে পারে বলে আশঙ্কা এনসিপি-র। ঠিক যে কৌশলে ডিএমকে বা মুলায়ম সিংহ যাদবকেও বাগ মানিয়ে থাকে কংগ্রেস, সে ভাবে চাপ বাড়াবে এনসিপি-র উপরেও।
বস্তুত, মহারাষ্ট্রে এনসিপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ। মহারাষ্ট্রে রাজ্যের সেচ প্রকল্প নিয়ে তিনি ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাতেই চটেছে এনসিপি। শরদ পওয়ারের ভাইপো তথা উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সেচমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আমলে রাজ্যে বাঁধ তৈরির জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু সেচের আওতায় এলাকার পরিমাণ বেড়েছে মাত্র ০.১%। এখনও এনসিপি-র নেতা সুনীল তাটকরের হাতেই সেচ দফতর রয়েছে। তাই এই নিয়ে তদন্ত হলে দায় পুরোপুরি এনসিপি-র ঘাড়েই বর্তাবে। এনসিপি নেতাদের তাই বলছেন, কোনও দুর্নীতি হয়নি। কাজেই শ্বেতপত্রেরও প্রয়োজন নেই। আবার দিল্লির মহারাষ্ট্র সদন তৈরিতে এনসিপি-নেতা, রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী ছগন ভুজবলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তাঁর পাশে দাঁড়াননি পৃথ্বীরাজ। লাভাসা-সহ পুণের বিভিন্ন আবাসন ও নগরোন্নয়ন প্রকল্পে ছাড়পত্র না মেলার ফলেও এনসিপি শিবিরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলা পরিষদের নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারাতে এনসিপি শিবসেনা ও বিজেপির সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে। শুধু তাই নয়, পওয়ারের চাপের কৌশল মেনে এনসিপি নেতারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।
চাপ দিয়ে পওয়ার কী আদায় করতে চাইছেন? এনসিপি সর্বাগ্রে চাইছে, পৃথ্বীরাজের লাগাম টেনে ধরুন সনিয়া গাঁধী। তা ছাড়া, দিল্লিতেও ইউপিএ-র সমন্বয় কমিটি গঠন করে পওয়ারকে সেই কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়ারও দাবি রয়েছে। পওয়ার আরও চান, রাজ্যসভায় তাঁর দলের নেতা তারিক আনোয়ারকে ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ দেওয়া হোক। তাঁর কয়েক জন পছন্দের ব্যক্তিকে রাজ্যপালের গদিতে বসানো হোক। মন্ত্রিসভার দু’নম্বর ব্যক্তির মর্যাদা না মেলাতেও পওয়ার ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
কোনও ক্ষেত্রেই অবশ্য কংগ্রেসের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস মেলেনি। যাঁকে মন্ত্রিসভায় দু’নম্বর ব্যক্তির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে বলে পওয়ার ক্ষুব্ধ হয়েছেন, সেই এ কে অ্যান্টনি যুক্তি দিয়েছেন, “মন্ত্রিসভায় কেউ সিনিয়র বা জুনিয়র নেই, সকলেই সমান।”
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এনসিপি-র অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। খাদ্যশস্যে সহায়ক মূল্য বাড়ানোর জন্য পওয়ারের দাবি মানা হয়নি। পওয়ার ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের হর্তাকর্তা হওয়া সত্ত্বেও ক্রীড়া বিল তৈরির সময় তাঁর মত নেননি ক্রীড়ামন্ত্রী অজয় মাকেন। আবার কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের ক্ষেত্রে ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেলের মত নেওয়া হয়নি। ভারী শিল্পমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাজে নজরদারির জন্য গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠীতেও প্রফুল্লকে রাখা হয়নি।
আজ পটেল ফের অভিযোগ তুলেছেন, “রাজনৈতিক বিষয়ে ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের মতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্রে বা রাজ্যে সরকারও আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলছে না।” এনসিপি নেতাদের বক্তব্য, কেন্দ্রে কংগ্রেসকে সমর্থন করার রাজনৈতিক মাসুল বিহারে চোকাতে হয়েছিল লালু প্রসাদকে। এনসিপি-রও সেই একই ভাগ্য হোক, তা চাইছেন না কেউ। সোমবার ফের দিল্লিতে এনসিপি-র বৈঠক বসবে। তার পরে তাঁরা দলের মতামত কংগ্রেসের কাছে পেশ করবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.