ভারতীয় বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলিতে ‘বিদেশি বিমান সংস্থা’র প্রত্যক্ষ লগ্নির দরজা খোলা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে কেন্দ্র। সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকের পর বিমান মন্ত্রী অজিত সিংহ সম্প্রতি এ কথা জানিয়ে বলেন, বিদেশিদের হাতে সর্বোচ্চ ৪৯% শেয়ার রাখার উর্ধ্বসীমা এখনই বাড়ানো হবে না।
তবে যে পরিবর্তন আনার কথা কেন্দ্র ভাবছে তা হল, ‘বিদেশি বিমান সংস্থা’কে লগ্নির অনুমতি দেওয়া। এত দিন দেশি বিমান সংস্থায় ৪৯% বিদেশি লগ্নির অনুমতি রয়েছে। কিন্তু প্রবেশাধিকার নেই ‘বিদেশি বিমান সংস্থা’র। বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা চললেও, পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় নি।
এয়ার ইন্ডিয়া বা কিংফিশারের মতো লেকসানে চলা বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলিতে ইতিমধ্যেই ক্ষমতার তুলনায় বেশি টাকা ঢেলেছে দেশের ব্যাঙ্কগুলি। তাই ব্যাঙ্কগুলি আর নতুন করে এই সংস্থাগুলিকে সাহায্য করতে চায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি, কোনও ভাবেই কিংফিশার এয়ারলাইন্সকে ত্রাণ প্যাকেজ দেওয়া যেত না বলে ফের জানিয়েছেন সিংহ।
ভবিষ্যতে যাতে বিমান সংস্থাগুলি বাধ্যতামূলক ভাবে ছোট শহরগুলিতে পরিষেবা দেয়, তা নিয়ে শীঘ্রই নতুন নিয়ম জারি করতে চলেছে বিমান মন্ত্রক। সে ক্ষেত্রে কম আসনের ছোট বিমান কিনতে বাধ্য থাকবে সংস্থাগুলি। পাশাপাশি এই সব ছোট শহর এবং পর্যটন ও র্তীথক্ষেত্রে হেলিকপ্টার পরিষেবা চালুর ব্যাপারেও আলোচনা করছে মন্ত্রক। অত্যাবশ্যক বিমান পরিষেবা তহবিল তৈরির বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে বলে জানান সিংহ।
এ দিকে, দেশে আরও উন্নত বিমান পরিষেবা দিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যুরো ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। শুধুমাত্র এই ক্ষেত্রের জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী তৈরির কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। এর সঙ্গেই লোকসভার আগামী শীতকালীন অধিবেশনে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর বদলে তার সমস্ত দায়িত্ব অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে নতুন বিল পেশ করতে চলেছে কেন্দ্র। পরিষেবা সংস্থাগুলিতে কর্মী নিয়োগ এবং আর্থিক স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে জোর দিতেই এই পদক্ষেপ বলে তাঁর ইঙ্গিত। গত কয়েক বছরে বিমান পরিষেবার নানা ক্ষেত্রে (উন্নত বিমানবন্দর, নতুন প্রযুক্তি, যাত্রী সংখ্যা এবং উড়ান বৃদ্ধি) প্রচুর পরিবর্তন এসেছে। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিসিএ এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেও ঢেলে সাজতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন সিংহ। উন্নত পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কর্মী জোগান দিতে ন্যাশনাল এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি বা বিমান পরিবহণের জন্য আলাদা ভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও গড়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা করা হচ্ছে বলে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে বলে দাবি করেন অজিত সিংহ। |