অনিশ্চয়তায় বাড়ছে ঝুঁকি
নীতি নিয়ে কেন্দ্রকে দুষলেন শিল্পকর্তারা
রকারি নীতির অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছে ভারতে ব্যবসার ঝুঁকি। সেই অনিশ্চয়তাই লগ্নির প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছে শিল্পমহল। তাদের দাবি, আজকে টাকা ঢাললে আগামী কাল ব্যবসা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কেন্দ্রীয় সরকারি নীতিতে সেই নিশ্চয়তা মিলছে না। বরং তার অভাবই ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিচ্ছে।
৮৪ তম বার্ষিক সভা উপলক্ষে দেশের আর্থিক অবস্থার হাল ফেরানো নিয়ে এক আলোচনার আয়োজন করে ইন্ডিয়ান চেম্বার। যে-সব ক্ষেত্র সরকারি নীতি নিয়ে দোলাচলে রয়েছে, বণিকসভাটি সেই সব শিল্পের অন্যতম দুই কর্তা, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের রাহুল ভাটিয়া ও এসার গোষ্ঠীর শশী রুইয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
শিল্পের বিকাশে কী ভাবে সরকারি নীতির অনিশ্চয়তা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে, দু’জনের বক্তব্যেই তা এ দিন ঘুরে ফিরে এসেছে। রুইয়ার দাবি, বিদ্যুৎ বা টেলিকমের মতো পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে ন্যূনতম নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না লগ্নিকরারীরা। ইন্ডিগো-কর্তার দাবি, বিমান পরিবহণ শিল্পের নীতি তৈরিতে প্রাধান্য পাচ্ছে কিছু সংস্থার সুবিধা-অসুবিধা। সার্বিক শিল্পের কথা সে ক্ষেত্রে মাথায় রাখছেন না নীতি নির্ধারকেরা। ফলে বাধা পাচ্ছে শিল্পের বিকাশ।
শশী রুইয়া রাহুল ভাটিয়া
বস্তুত, বিমান পরিবহণ ক্ষেত্র এখন কিছুটা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি সংস্থাও ব্যবসা চালাতে গিয়ে সমস্যার মুখে। এই শিল্পের সমস্যা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ইন্ডিগো-কর্তার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন উৎসুক শ্রোতারা। এ ক্ষেত্রে সরকারি নীতির বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ওই বিমান-কর্তা। যেমন রুগ্ণ সরকারি সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার পাশাপাশি কোনও কোনও ‘অদক্ষ’ বেসরকারি সংস্থাকেও টিকিয়ে রাখতে সরকার কেন সুবিধা দিচ্ছে, সে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, সরকারি নীতির ক্ষেত্রে এই বৈষম্য প্রতিযোগিতার বাজারের ভারসাম্যকেই নাড়িয়ে দিচ্ছে। সার্বিক নীতি তৈরি না-করে কিছু সংস্থাকে পক্ষপাতিত্ব দেখানো আর বাকিদের জন্য আলাদা নীতি নেওয়ার ফলেই ব্যবসায় টাকা ঢালার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত তাঁর।
সরকারি নীতিতে দৃঢ়তার অভাবই ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আর একটি কারণ বলে মনে করেন ইন্ডিগো-কর্তা। কারও নাম না করেও তাঁর প্রশ্ন, কোনও সংস্থার পাইলট বা কর্মীরা মাসের পর মাস বেতন না-পেলে নিরাপত্তার বিষয়টি কী ভাবে নিশ্চিত করা যায়? মার্কিন মুলুকে এ রকম ঘটলে শীর্ষ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সংস্থার উড়ানই বন্ধ করে দিতেন, দাবি তাঁর।
ব্যবসা করতে এলে যে ঝুঁকি থাকবেই, সে কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না শিল্পমহল। তবে তার যে একটা সীমা থাকে, মনে করিয়ে দেন শশী রুইয়া। তাঁর মতে, সেই ঝুঁকির সীমা নির্ভর করে সরকারি নীতির উপরেই। দেশে কয়লা বা স্পেকট্রামের মতো প্রাকৃতিক সম্পদের বণ্টন নীতি ঘিরে অনিশ্চয়তা সেই ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে, অভিযোগ তাঁর। উদাহরণ দিয়ে রুইয়া জানান, যেমন কয়লা ব্লক বণ্টন নীতির অনিশ্চয়তা থমকে দিচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো শিল্পের বিকাশ। তাঁরা ১০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু কয়লার জোগান নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরিকল্পনাটি থমকে। পড়ে রয়েছে কয়লা উত্তোলনের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করে কেনা যন্ত্রও।
এর আগেও সংস্কার নিয়ে শ্লথগতি ও সরকারি নীতির পঙ্গুত্ব নিয়ে মুখ খোলেন প্রথম সারির শিল্পকর্তারা। আর্থিক সংস্কার নিয়ে সম্প্রতি বণিকসভা ফিকি-ও দশ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রকে। সরকারি নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা ও তার জেরে তৈরি হওয়া বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে শিল্পকর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ যে ক্রমশ বাড়ছেই, এ দিনের সভায় দুই শিল্পকর্তার বক্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.