ভুল শোধরানোর আশ্বাস মন্ত্রীর
কলা শাখার জন্য বিজ্ঞানের শিক্ষক
নুমতি মিলেছে কলা শাখার বিভিন্ন বিষয় পড়ানোর। কিন্তু শিক্ষক পাওয়া যাবে বিজ্ঞানের। ফলে মাধ্যমিক থেকে সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হওয়া অন্তত একশো স্কুল পড়েছে আতান্তরে।
মুর্শিদাবাদে ২২টি স্কুলে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ১৬টি স্কুলে, হাওড়ায় অন্তত ৬টি স্কুলে এমন গোলমাল হয়েছে। সমস্যাটা ছড়িয়ে রয়েছে অন্য জেলাতেও। সংসদ আর স্কুলশিক্ষা দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ভুগতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। সমস্যা সমাধানের জন্য বহু স্কুলের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিকাশ ভবন ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দ্বারস্থ হয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, যে সব স্কুলে সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ‘ভুল শুধরে’ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক পদই মঞ্জুর করা হবে।
গত তিন শিক্ষাবর্ষে রাজ্যে প্রায় চারশো মাধ্যমিক স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক চালু হয়েছে। এর মধ্যে অনেক স্কুলই কলা শাখায় পঠনপাঠন চালু করার জন্য আবেদন জানিয়েছিল। সরকারি নীতি মেনে স্কুলগুলির পরিকাঠামো বিচার করেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তার অনুমোদন দেয়। কিন্তু গত বছর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যে সব স্কুলকে উন্নীত করা হবে, তার অন্তত ৫০ শতাংশে বিজ্ঞানের বিষয় খুলতে হবে। আর সেই অনুযায়ীই শিক্ষক পদের অনুমোদন দেয় স্কুলশিক্ষা দফতর। এতে দেখা যায়, কলা শাখায় পড়ানোর জন্য বিজ্ঞানের শিক্ষক পদ মঞ্জুর করা হয়েছে বহু স্কুলে।
ডায়মন্ড হারবার জনকল্যাণ সঙ্ঘ বালিকা বিদ্যালয়ে গত বছর থেকে একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শন চালু হয়েছে। অথচ শিক্ষক পদ মঞ্জুর হয়েছে বিজ্ঞানের। স্কুল সূত্রের খবর, বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে যাঁরা স্নাতক স্তরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, শিক্ষা, দর্শন ইত্যাদি ‘জেনারেল’ বিষয় হিসেবে পড়েছেন, তাঁদের দিয়েই পঠনপাঠন চালানো হচ্ছে। অর্থাৎ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস নেওয়ার কথা নয়, অনেক ক্ষেত্রেই ঠেকায় পড়ে তাঁদের দিয়েই পঠনপাঠন চালানোর চেষ্টা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বাঁকুড়ার দুধিয়া হাইস্কুলে চলতি শিক্ষাবর্ষেই একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি চালু হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অনুমতি নিয়ে বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি শুরু হয়েছে সংস্কৃত, ভূগোল, অর্থনীতি ও প্রাণিবিদ্যার পঠনপাঠন। সেই জায়গায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও গণিতের শিক্ষক পদ মঞ্জুর করা হয়েছে। লালগড় গার্লস হাইস্কুল, পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিবেড়িয়া বালিকা বিদ্যালয় ইত্যাদি শ’খানেক স্কুল আপাতত এই সমস্যার শিকার।
একের পর এক স্কুলে এ ধরনের জটিলতা তৈরি হওয়ায় স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একাংশ ক্ষুব্ধ। এক জেলা পরিদর্শক তো সরাসরিই অভিযোগ করলেন, “দফতর ইচ্ছাকৃত ভাবে এটা করেছে। যার জেরে এতগুলি স্কুলের পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে।”
কিন্তু এমন গোলমালের কারণ কী? মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানার নামে কলা শাখার পঠনপাঠনের জন্য বিজ্ঞানের শিক্ষক পদ মঞ্জুর করার এই ব্যাখ্যাকে ‘হাস্যকর’ বলেই মনে করছেন আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের মতে, বিজ্ঞান পড়ানোর পরিকাঠামো তৈরি না করে, কিংবা স্কুলকে বিজ্ঞানের বিষয় পড়ানোর অনুমতি না দিয়ে কেবল শিক্ষক পদ অনুমোদন করলেই বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার হবে, এই চিন্তার মধ্যে যুক্তি নেই।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমোদন নিয়েই একাদশ-দ্বাদশে পঠনপাঠন চালু করে সব স্কুল। অনেক স্কুলই সংসদকে জানিয়েছে, তাদের সমস্যা হচ্ছে। মুক্তিনাথবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর করছি। স্কুল কর্তৃপক্ষের যাতে পঠনপাঠন চালাতে সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর দিয়েই যা করার করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.