চাকদহ কলেজ
টোকাটুকির নালিশ নিয়ে চাপানউতোর
ব্যাপক গণটোকাটুকির অভিযোগ উঠল চাকদহ কলেজে। ওই কলেজে শুক্রবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ সাধারণ প্রথম বর্ষের বাংলা পত্রের পরীক্ষা ছিল। চাকদহ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রানাঘাট কলেজের ছাত্রেরা ব্যাপক গণটোকাটুকি করেছে। তারা পরীক্ষার শুরু থেকেই টোকাটুকির করতে দেওয়ার দাবি তুলেছিল। আমাদের শিক্ষকেরা সে কথা শুনতে না চাওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন আমাদের কলেজের শিক্ষকেরা ঘর ছেড়ে চলে এসেছিলেন। তার পরে আমরা দেখেছি, অবাধে টোকাটুকি হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমরা অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। পুলিশ ও র‌্যাফ পরে এসেছিল।” পরীক্ষার্থীদের অবশ্য দাবি, টোকাটুকি হয়নি, কলেজের শিক্ষকেরা সামান্য ঘটনাকে বড় করে দেখাচ্ছেন।
কলেজে র‌্যাফ। — নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “পুরো ঘটনাটাই খুবই নিন্দ্যনীয় ঘটনা। আমি জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। এর সঙ্গে যারাই জড়িয়ে থাকুন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই কলেজের শিক্ষকেরা কেন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরিদর্শন করতে চাননি, তা-ও জানতে চাইব।” বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহের সহকারী নিয়ামক সুকান্ত মজুমদারের কথায়, “কয়েকটি ছেলে কিছু টুকলি সরবরাহ করতে যাচ্ছিল বলে আমরা খবর পেয়েছি। তবে তাদের পুলিশ ও র‌্যাফ গিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষা যথারীতি হয়েছে।” এই দিন সকাল দশটা নাগাদ পরীক্ষা শুরু হয়। কলেজের পরীক্ষার সুপারভাইজার শুভতোষ বিশ্বাস বলেন, “ছাত্রেরা যে যার ইচ্ছে মতো আসনে বসেছিল। তার পরে দাবি করতে থাকে, তাদের ইচ্ছে মতো টুকতে দিতে হবে। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলে শিক্ষকদের গালিগালাজ করা হয়। তখন তাঁরা ঘর ছেড়ে চলে যান।”
তবে পরীক্ষার্থী জয়দীপ বসুর দাবি, “টোকাটুকি হয়নি। ওই কলেজের শিক্ষকেরা সামান্য বিষয়কে বিরাট করে দেখাচ্ছেন।’’ পরীক্ষার্থী পার্থ বিশ্বাসের কথায়, “শিক্ষকেরা বিষয়টি বড় করে দেখাবেন বলেই স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়ে চলে যান।” পরীক্ষার্থী গৌতম শেখ বলেন, “সামান্য ঘাড় ঘোরালেই খাতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল। বাথরুম গিয়ে আসতে দেরি করলে খাতা আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে রাখা হচ্ছিল।”
রানাঘাট কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জানকীনাথ দাস বলেন, “চাকদহ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী ছাত্রদের অকারণে অপবাদ দিচ্ছেন। পরীক্ষার্থীদের উপরে তাঁরা মানসিক অত্যাচার করেন।” চাকদহ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূলের বিধায়ক নরেশচন্দ্র চাকি বলেছেন, “টোকাটুকি হয়ে থাকলে, তা খুবই খারাপ ব্যাপার। তবে এই কলেজে আগেও গোলমাল হয়েছে।” তিনি বলেন, “এখানকার কিছু বাম মনোভাবাপন্ন শিক্ষকের মদতেই এমন কাণ্ড হচ্ছে।” রানাঘাট কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সরকার বিরোধী ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন সদস্যই এই দিন গণ্ডগোল করেছে।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক কৌশিক দত্তের দাবি, “শিক্ষায় ’৭২ সালকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশ করানোর জন্যই টুকতে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল।” জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিত্যগোপাল মণ্ডলের কথায়, “গুটি কয়েক পরীক্ষার্থীর জন্যই এই কাণ্ড হয়েছে। এই জন্য আমি কলেজ কর্তৃপক্ষকেই দায়ি করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.