কালীপুর থেকে দামোদরপুর দীর্ঘ পথের যন্ত্রণা
খারাপ রাস্তায় প্রাণ হাতে করে যাতায়াত বাসিন্দাদের
গোটা রাস্তা জুড়ে খানাখন্দ। পিচ উঠে গিয়েছে বহু জায়গায়। কোথাও কোথাও একহাঁটু গর্ত। মাসের পর মাস এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। সাইকেল, মোটর বাইক, ভ্যানরিকশা থেকে শুরু করে রুটের বাস চলছে হেলে-দুলে। সন্তর্পণে। তবে, এই পথ মাড়ানোর ঝুঁকি নিচ্ছে না অ্যাম্বুল্যান্স। প্রসূতি নিয়ে মাতৃযানও হাসপাতালে পৌঁছচ্ছে ঘুরপথে। এই রাস্তা এড়িয়ে। আরামবাগের কালীপুর থেকে গোঘাটের দামোদরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের রাস্তাটি ক্রমশই বিভীষিকা হয়ে উঠছে সকলের কাছেই।
রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে গত এক বছর ধরে প্রশাসনের সর্বস্তরে কাকুতি মিনতি করেছেন গ্রামবাসীরা। আন্দোলন হয়েছে। তবুও সংস্কার হয়নি। দিনের পর দিন চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে রাস্তাটি। হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সিপিএমের প্রদীপ সাহা বলেন, “নতুন সরকার টাকা দিচ্ছে না। শুধু ওই রাস্তাটিই নয়, ওই প্রকল্পের জেলার অনেক রাস্তার দশা বেশ খারাপ। তার মধ্যেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কিছু রাস্তা মেরামতের চেষ্টা চলছে। তার মধ্যে ওই রাস্তাটি অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা, তা দেখছি।”
ছবি: মোহন দাস।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে রাস্তাটি সরু ছিল। বছর আটেক আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে রাস্তাটি চওড়া করা হয়। বছর তিনেক যেতে না যেতেই রাস্তাটি ভাঙতে আরম্ভ করে। বালি পঞ্চায়েতের প্রধান, সিপিএমের ভুমেন্দ্রমোহন রায়ের অভিযোগ, “রাস্তাটি নির্মাণের ক্ষেত্রে ঠিকাদার গুণগত মান বজায় রাখছেন না বলে তখনই প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। লাগাতার অভিযোগের জেরে কয়েকবার জোড়াতালি দেওয়া হলেও এখন যা অবস্থা, তাতে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার ছাড়া উপায় নেই।”
রাস্তাটি পাকা হওয়ার পরে তার গুরুত্বও অনেক বেড়ে যায়। আগে আরামবাগ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে যাতায়াত চলত মূলত ক্ষীরপাই হয়ে। গাড়িতে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা লেগে যেত। অথচ একই জায়গায় দামোদরপুর হয়ে যেতে মাত্র দেড় ঘণ্টা লাগে। তাই, এই রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার দুই জেলার মানুষই। ওই রুটে বর্তমানে তারকেশ্বর, আরামবাগ, হাওড়া যাতায়াতের প্রায় ২০টি বাস চলে। বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক অভয় বীট বলেন, “প্রায় প্রতিদিন বাসের যন্ত্রাংশ ভাঙছে। দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ৫ এবং ৬ জুলাই বাস বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করেছি। প্রশাসন তখন কথা দিয়েছিল, কুড়ি দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। কিন্তু প্রায় পনেরো দিন কেটে গেল। কোনও পদক্ষেপই তো দেখছি না।” মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীও স্বীকার করেছেন, “রাস্তাটি সংস্কার করা আশু প্রয়োজন।” সংস্কার নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের রাস্তা নির্মানের পরে নির্মাণকারী সংস্থা পরের পাঁচ বছর রক্ষণাবেক্ষণ করবে। তার পর থেকে রাজ্য সরকারের তরফে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের ওই সমস্ত রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা। অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই সময় মতো রাস্তা সারানো হয় না। হলেও জোড়াতালি দিয়ে কাজ সারা হয়। জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের জন্য বরাদ্দ থেকে রাজ্য সরকারের ওই টাকা দেওয়ার কথা। সেই অর্থ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই, সংস্কার করা যাচ্ছে না রাস্তা। অর্থাৎ, মানুষের দুর্ভোগ কবে কমবে, তা নিয়ে সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.