ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীতে তৈরি করা হয়েছিল তিনটি র্যাম্প (ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য তৈরি ছোট কংক্রিটের জেটি)। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে উপযুক্ত সংস্কার না হওয়ার কারণে বছর সাতেক আগে তৈরি র্যাম্পগুলির একেবারেই ভগ্নদশা। তিনটি র্যাম্পেরই বিপজ্জনক অবস্থা। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ওই বিপজ্জনক, ভাঙাচোরা র্যাম্প দিয়েই ট্রলার থেকে মাছ নামানোর কাজ করছেন মৎস্যজীবীরা। বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই। ভাঙা র্যাম্প সারানোও দূরঅস্ত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের নারায়ণপুর ঘাটে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী থেকে ট্রলারের মাছ তোলার জন্য ওই ঘাটে পাশপাশি তিনটি র্যাম্প তৈরি করেছিল নামখানা পঞ্চায়েত সমিতি। কারণ ভাটার সময় নদী সরাসরি ট্রলার ঘাটে ভেড়ানো যায় না। র্যাম্পের কাছে ট্রলার নোঙর করলে সহজেই সেখান থেকে মাছ নামানো যায়। বহু ট্রলার নারায়ণপুর ঘাটের কাছে তৈরি এই র্যাম্প ব্যবহার করায় সেখানে একটি মাছের বাজারও তৈরি হয়েছে। স্থানীয় ওই ঘাটের নাম নেতাজি ঘাট। কিন্তু বছরের পর বছর কোনওরকম সংস্কার না হওয়ায় র্যাম্পগুলিরও বর্তমানে খুবই বিপজ্জনক দশা। কিন্তু গভীর সমুদ্র থেকে মাছ নিয়ে আসা ট্রলারগুলিকে ওই ভাঙাচোরা র্যাম্পই ব্যবহার করতে হচ্ছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে। |
স্থানীয় মৎসজীবীদের অভিযোগ, গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরে ট্রলারগুলি এই নেতাজি ঘাটে ফেরে। সারা বছর ধরেই এটা চলে। তবে বর্ষার সময় ট্রলার আসার সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক ট্রলার থেকে মাছ নামানোর কাজ করেন। নামখানা পঞ্চয়েত সমিতিকে ট্রলারপিছু ৩০ টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু র্যাম্পগুলি বিপজ্জনক হওয়া সত্ত্বেও সেখান দিয়েই ট্রলার থেকে মাছ নামানোর কাজ করতে হয়। পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমও হয়েছেন অনেকে। অবস্থা যা তাতে যে কোনও দিন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও র্যাম্পগুলি সারাতে প্রশাসনের কোনও নজরই নেই।
নেতাজি মৎস্যবন্দর ঘাটের শ্রমিক খলিল শেখ, রহমান শেখদের অভিযোগ, “এই ঘাট দিয়ে গভীর সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলিতে বরফ, তেল, ওঠানো-নামানো হয়। ভাঙা, বিপজ্জনক র্যাম্পে ওই কাজ করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। র্যাম্পগুলি সারানোর জন্য পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়াও সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদরে কাছে বহুবার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।”
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুমারেশ পণ্ডা বলেন, “ওই র্যাম্পগুলি সারানোর জন্য সমিতির তহবিল থেকে সাত লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।” কিন্তু এখনও কাজ শুরু না হওয়ার কারণ হিসাবে তিনি জানান, র্যাম্পগুলির কাছে অধিকাংশ সময় ট্রলার দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে কাজ শুরু করতে সমস্যা হচ্ছে। |