পাঁচ বারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু অলিম্পিক ফুটবলে কোনও সোনা নেই। তবু দেশটার নাম যেহেতু ব্রাজিল, লন্ডন অলিম্পিকে নেইমার-পাতো-হাল্ক-থিয়াগো সিলভারা পৌঁছতেই প্রচারমাধ্যমের পাশাপাশি ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যেও হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে। আকর্ষণের কেন্দ্রে অবশ্যই স্যান্টোসের নেইমার। পেলে পর্যন্ত যাঁর স্কিলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ব্রাজিলের সিনিয়র দলের হয়ে ১৮ ম্যাচে ৯ গোল করা বছর কুড়ির ফরোয়ার্ডও লন্ডনে পা রেখে জমিয়ে দিয়েছেন। বলে দিয়েছেন, “চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সমস্ত রকম মশলা আমাদের টিমে আছে। অলিম্পিক ফুটবলে ব্রাজিলের অতীত যেমনই হোক না কেন, আমি মনে করি এ বার লন্ডনে আমাদের দল অন্যতম ফেভারিট।”
১৯০০ অলিম্পিক থেকে চালু ফুটবলে ব্রাজিল সাকূল্যে দু’বার (১৯৮৪ ও ’৮৮) ফাইনাল খেলেছে। কিন্তু ফ্রান্স ও রাশিয়ার চূড়ান্ত বাধা টপকাতে পারেনি। আর ১৯৯৬ ও চার বছর আগে বেজিং অলিম্পিকে তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছিল। পাশাপাশি তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্তিনা শেষ দু’টো অলিম্পিকেই ফুটবলে সোনাজয়ী। এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে সোনার হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি অলিম্পিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি বার (৩) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডের ভাগীদারও হবে। গ্রেট ব্রিটেন এবং হাঙ্গেরির সঙ্গে। |
নেইমার অবশ্য অন্য স্বপ্ন দেখছেন। ব্রাজিল কোচ মানো মেনেজেসের ফরোয়ার্ড লাইনই সেরা অস্ত্র বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নেইমার ছাড়া যেখানে আছেন এ সি মিলানের পাতো এবং পোর্তোর হাল্ক। অলিম্পিক ফুটবল অনূর্ধ্ব তেইশের টুর্নামেন্ট হলেও ফিফার নির্দেশে প্রতিটা দেশ তিন জন তেইশের বেশি বয়সি প্লেয়ার টিমে রাখতে পারে। ব্রাজিল টিমে এ বার সে রকম ফুটবলার হাল্ক ছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদের লেফট্ ব্যাক মার্সেলো এবং কয়েক দিন আগেই প্যারিস সাঁ জা-য়ে সই করা থিয়াগো সিলভা। যাঁদের কথা ভেবেই হয়তো আত্মবিশ্বাসী নেইমার বলছেন, “আমরা লন্ডন থেকে নিজেদের দেশে অলিম্পিক ফুটবলের প্রথম সোনার পদকটা নিয়ে যেতে চাইছি। এত বড় আন্তর্জাতিক খেলাধুলোর মঞ্চে এসে দাঁড়ালে তো নিজেদের এমনিতেই দারুণ উদ্দীপ্ত লাগে। আলাদা করে কোনও মোটিভেশনের দরকার পড়ে না। ফলে আমরা ভাল ফলের আশাই করছি।” লন্ডন অলিম্পিকে ফুটবল ঐতিহাসিক ওয়েম্বলি এবং ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ছাড়াও আরও চারটে স্টেডিয়ামে হবে। নেইমার বলেছেন, “বেশ মনে আছে, ছোটবেলায় টিভিতে অলিম্পিক দেখতাম। আমার স্বপ্ন শুধু ফুটবলার হয়ে ওঠাই ছিল না। শুধু বিশ্বকাপ খেলাও আমার স্বপ্ন নয়। আমার স্বপ্ন অলিম্পিক খেলাও। সেই স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে।” নেইমারের মতে, অলিম্পিক ফুটবলে ব্রাজিলকে সফল হতে গেলে টিমের প্রত্যেক প্লেয়ারকে কিছু না কিছু অবদান রাখতে হবে। “তা হলেই আমাদের মধ্যে টিমগেম গড়ে উঠবে। আমরা সত্যিকারের শক্তিশালী হব,” বলেছেন তিনি। নেইমারের কাছে অলিম্পিক ক্রীড়াক্ষেত্রের সর্বোত্তম মিলনমেলাও। বলেছেন, “সুযোগ পেলেই উসেইন বোল্ট আর আমেরিকান বাস্কেটবল সুপারস্টার জেমস লেব্রনের সঙ্গে আলাপ করব। ওদের সঙ্গে ছবি তুলব। ওদের অটোগ্রাফ নেব।” সোমবার বাস্কেটবলে ব্রাজিলকেই শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আমেরিকার অলিম্পিক টিম হারিয়েছে। যে ম্যাচে জেমস একাই ৩০ পয়েন্ট করেন। স্টেডিয়ামে বসে যা দেখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বয়ং! |