ত্রাণে নেই শিশু-খাদ্য
চিনেমাটির বাটিতে একটি মেরি বিস্কুট গুড়ো করে জলে গুলে নিলেন সরবালা রায়। দেড় বছরের ছেলের তর সইছিল না। রাস্তার পাশে পলিভরা ঘাসে বসে হাত পা ছুঁড়ে কাঁদছিল সে। পেট তলিয়ে পিঠে মিশেছে। মা বাবাবাছা করেছেন অনেক লাভ হয়নি। কিছুক্ষণ বাদে বিস্কুট গোলা জলের বাটি মুখের সামনে ধরতে কান্না থামল। ছোট্ট শিশু এক চুমুকে খেয়ে নেয় পুরোটা। কতদিনের খিদে যেন। সরবালা বলেন, “কোথাও দুধ পেলাম না। অনেক খুঁজে বিস্কুট এনেছি। সেটাই জলে গুলে দুধ বানালাম।” প্রশাসন থেকে দেয়নি? ময়নাগুড়ির চাতরারপাড় গ্রামের বধূ অবাক চোখে তাকান। সরকারি লোক ভেবে জানতে চান, “কোথায় দুধ দিচ্ছে? এখানে কেউ আসেনি।” শুধু চাতরাপাড়া কেন? মঙ্গলবার দেড়টা পর্যন্ত সরকারপাড়া, বর্মনপাড়া এলাকার বানভাসি কোনও শিশুর হাতে সরকারি ত্রাণ গুড়ো দুধ পৌঁছয়নি। খিচুড়ি পেয়ে ওঁরা সেটাই চটকে শিশুদের খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। স্থানীয় বধূ সন্ধ্যা সরকার বলেন, “দুই তিন বছরের বাচ্চা খিচুড়ি খেতে পারে? জল খাওয়াই তারও উপায় নেই। এলাকার পঞ্চায়েত ছেলেদের নিয়ে সামান্য কিছু ব্যবস্থা করার রক্ষা পেয়েছি।” ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, “ত্রাণ বিলি চলছে। সমস্যা হবে না।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এলাকায় সরকারি ত্রাণ বলতে পৌঁছেছে এক কুইন্টাল চিড়ে আর কিছু পলিথিন। সেটাও দেওয়া হয়েছে রবিবার। সোমবার থেকে বেসরকারি ত্রাণের ভরসায় আছে আড়াইশো পরিবার। দুপুর পর্যন্ত প্রশাসনের কর্তাদের দেখা না পেয়ে এলাকাবাসী রাস্তার পাশে গ্যাসের স্টোভ জ্বালিয়ে রান্না শুরু করেন। পুলিশ গিয়ে আশ্বাস দেয়। বর্মনপাড়া বুথের পঞ্চায়েত সদস্য নিরেন দাস বলেন, “সবাই ত্রাণের আশায় বসে।” দোমহনি-১ পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসন থেকে চাতরাপাড়ার জন্য ৫০ কেজি, সরকারপাড়ার জন্য ১০০ কেজি এবং বর্মনপাড়ার জন্য ৭৫ কেজি চাল, কিছু পলিথিন, শিশুদের জামা পাঠানো হয়। প্রধান বলেন, “অনেক বলে সরকারি ত্রাণ পাওয়া গিয়েছে। শিশুদের খাবার পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের কর্তারা বলেছেন সেটা পাঠানো হবে। সেই ভরসায় আছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.