|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে উঠলেন লক্ষ্মণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও হলদিয়া |
একদা তাঁর ‘খাসতালুক’ ছিল হলদিয়া। কিন্তু আদালতের নিষেধ থাকায় আপাতত শুধু হলদিয়া নয়, পূর্ব মেদিনীপুরেই ঢুকতে পারবেন না প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। তাই মঙ্গলবার জেলমুক্ত লক্ষ্মণবাবু এখন কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরেই থাকবেন। এবং থাকবেন মমতার বাড়ির রাস্তা হরিশ মুখার্জি রোডে একটি ভাড়াবাড়িতে।
১২২ দিন কারাবাসের পরে আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে এ দিন সকালেই ছাড়া পান লক্ষ্মণবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, হরিশ মুখার্জি রোডে তাঁর জন্য দোতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাট তিন মাসের জন্য ভাড়া নিয়েছে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাখা। জেল থেকে বেরিয়ে সেই বাড়িতেই উঠেছেন নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত ওই সিপিএম নেতা। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠ। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় গত শুক্রবারেই লক্ষ্মণবাবুর জামিন মঞ্জুর করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু হলদিয়া আদালত হয়ে কাগজপত্র দেরিতে আসায় তাঁর মুক্তি হল তিন দিন পরে। জামিনের শর্ত হিসেবে লক্ষ্মণবাবু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ঢুকতে পারবেন না। তাই আদালত পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত তিনি থাকবেন কলকাতাতেই। জামিনের শর্ত, জেল থেকে বেরিয়ে লক্ষ্মণবাবু যেখানে থাকবেন, সেখানকার থানায় মাসে দু’বার হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। সেই শর্ত অনুযায়ী লক্ষ্মণবাবুকে এখন মাসে দু’বার হাজিরা দিতে হবে ভবানীপুর থানার ওসি-র কাছে। |
|
জেল থেকে বেরোচ্ছেন লক্ষ্মণ শেঠ। —নিজস্ব চিত্র |
এ দিন লক্ষ্মণবাবুর মুক্তির সময় জেল-চত্বরে হাজির ছিলেন তমালিকা, পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম নেতা কানু সাউ, দলের রাজ্য নেতা রবীন দেব। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বাস ভাড়া করে এসেছিলেন বেশ কিছু সমর্থকও। তাঁদের হাতে ছিল সিপিএমের ঝান্ডা। লক্ষ্মণবাবু জেলের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সমর্থকেরা তাঁর নামে স্লোগান দিতে শুরু করেন। ভাড়াবাড়িতে যাওয়ার পথে লক্ষ্মণবাবু বলেন, “বিভিন্ন জেলে আমাদের যে-সব সহকর্মী আছেন, আশা করছি, তাঁরাও ধীরে ধীরে ছাড়া পাবেন।”
লক্ষ্মণবাবু প্রায় চার মাস পরে ছাড়া পাওয়ায় তাঁর জেলার সহকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন বিধায়ক নিত্যানন্দ বেরার প্রতিক্রিয়া, “এটা আমাদের জয়। এ ভাবে যাঁরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে জেলে রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের মুক্তি চাই। লক্ষ্মণবাবুর হাত ধরেই আমার দলে আসা, বিধায়ক হয়ে ওঠা। সেই অভাব অনুভূত হচ্ছিল। উনি মুক্তি পাওয়ায় মনে জোর পেলাম।” লক্ষ্মণবাবুর আইনজীবী তথা হলদিয়ার পুর-পারিষদ বিমল মাজি বলেন, “জামিনের ক্ষেত্রে আদালত যে-শর্ত রেখেছে, তার বিরোধিতা করব না। তবে আমরা লক্ষ্মণদাকে হলদিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এগোব।”
আপাতত লক্ষ্মণবাবু পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকতে না-পারলেও দলের জেলা নেতারা কলকাতায় এসেই তাঁর পরামর্শ নেবেন বলে জানিয়েছেন। হলদিয়া ডক-সাইট লোকাল কমিটির সম্পাদক, শ্রমিক ভবনের ভারপ্রাপ্ত নেতা বিশ্বনাথ মান্না বলেন, “কোনও কাজ ওঁর পরামর্শ ছাড়া করিনি। আপাতত উনি জেলায় আসতে না-পারলেও আমরা কলকাতায় গিয়ে ওঁর সঙ্গে দেখা করতে পারব।” সুতাহাটা লোকাল কমিটির সম্পাদক তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের আশা, জামিনের শর্ত উঠে যাওয়ার পরে লক্ষ্মণবাবু কিছু দিনের মধ্যেই হলদিয়ায় যাবেন। |
|
|
|
|
|