নিয়ম না মেনে টেন্ডার ছাড়াই হুগলি জেলা পরিষদের কোটি টাকার ওষুধ কেনার মামলায় শুক্রবার চার্জশিট দিল সিআইডি। চুঁচুড়া আদালতে জমা দেওয়া ২১ পাতার ওই চার্জশিটে জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি অসিত পাত্র-সহ দু’জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আত্মসাৎ, সই জাল, প্রতারণা, অপরাধ চেপে যাওয়ার নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এফআইআর হওয়ার ৮৭ দিনের মাথায় চার্জশিট দিল সিআইডি। এ ছাড়া ৫০০ পাতার ‘কেস ডায়েরি’ও এ দিন আদালতে জমা দেয় সিআইডি।
২০০৯ সালে হুগলির তৎকালীন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) ভূষণ চক্রবর্তী চুঁচুড়া থানায় লিখিত ভাবে অসিতবাবুর বিরুদ্ধে ওষুধ কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন। অসিতবাবু সেই সময় জেলা সভাধিপতি ছিলেন। তা ছাড়া, সে সময়ে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে ওষুধ ও সরঞ্জাম কেনার যে ‘পারচেজ কমিটি’ ছিল, সিপিএম নেতা অসিতবাবুই পদাধিকার বলে তার প্রধান ছিলেন। নিয়মিত সরবরাহ ছাড়াও বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতিতে ওষুধ কেনার বিশেষ ক্ষমতা তাঁর ছিল। তিনি সেই ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করেছেন বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরেও অভিযোগ জানান ভূষণবাবু।
গত ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয় অসিতবাবুকে। চার্জশিটে সিআইডি দাবি করেছে, ওই সময়ে জেলায় অত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার প্রয়োজন ছিল না। বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার ওষুধ কেনা হয়েছিল। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ওষুধ কেনার বহু নথিতে সিএমওএইচের সইয়ের জায়গায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘পারচেজ কমিটি’র প্রধান হিসেবে অসিতবাবুই সই করেছিলেন। ওই নথিগুলির বিষয়ে নির্দিষ্ট তদন্ত করা হয়েছে। প্রায় ৪ কোটি সরকারি টাকা নয়ছয় করা হয়েছে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে অসিতবাবুর জামিন সংক্রান্ত শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। |