বিশ্বভারতীর পাঠভবনে পঞ্চম শ্রেণির এক আবাসিক ছাত্রীর প্রতি ওয়ার্ডেনের ‘অমানবিক’ আচরণ নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় হচ্ছে। ছাত্রীর পোশাক খোলানোর অভিযোগে কাঠগড়ায় গাইঘাটার স্কুলশিক্ষিকা।
কিন্তু নির্যাতনের অভিযোগ থামছেই না। এ বার ক্লাসঘরে জল ফেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পোশাক খুলে তা মুছতে বলার অভিযোগ উঠল হলদিয়ায়। ইতস্তত করায় তাকে পেটানো হয় এবং তাতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে স্কুল পরিচালন সমিতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর মা। উত্তর চব্বিশ পরগনার গোপালনগরে আবার সহপাঠীর টাকা চুরির অভিযোগে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সম্ভ্রমহানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। হাবরায় বেত খেয়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্র হাসপাতালে। |
সুতাহাটার স্কুলে অভিযোগ জানালেন নিগৃহীতা ছাত্রীর মা। |
হলদিয়ার সুতাহাটায় দোরোকৃষ্ণনগর বাণীতীর্থ বালিকা বিদ্যালয়ে অভিযোগের তির প্রধান শিক্ষিকা সন্ধ্যারানি জানার দিকে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নীলাঞ্জনা মাইতির সহপাঠীদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার দুই বন্ধুর সঙ্গে সে ক্লাসেই টিফিন খাচ্ছিল। সে সময়ে মেঝেতে জল পড়ে। পরে সংস্কৃতের ক্লাস নিতে এসে প্রধান শিক্ষিকা জানতে চান, জল পড়ে কেন। অভিযোগ, কারণ জেনে তিন ছাত্রীকেই প্রচণ্ড বকাবকি ও মারধর করেন তিনি। নীলাঞ্জনাকে পোশাক খুলে জল মুছতে বলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর করতে হয়নি। লাঠির ঘায়ে তার ডান হাতের কব্জি, ডান পা ও কোমরে যন্ত্রণা হতে থাকে। এ দিনও সে স্কুলে যেতে পারেনি। নীলাঞ্জনার মা কুমকুমদেবী এ দিন স্কুলে গিয়ে পরিচালন সমিতির সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁর প্রশ্ন, “আমিও বাড়িতে মেয়েকে শাসন করি। প্রধান শিক্ষিকাও মায়ের মতোই। নিশ্চয়ই শাসন করবেন। কিন্তু শাসন করা মানে কি এই!” সন্ধ্যাদেবীর বক্তব্য, “ক্লাসে গোলমাল থামাতে নীলাঞ্জনার হাতে মেরেছি। কিন্তু এমন মারিনি যে ও অসুস্থ হয়ে পড়বে।” তাঁর দাবি, “কোনও ছাত্রীকেই পোশাক খুলে জল মুছতে বলিনি।” পরিচালন সমিতির সম্পাদক তুষার মাইতি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পরিচালন সমিতি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।” |
গোপালনগরের গিরিবালা বালিকা বিদ্যালয়েও ছাত্রীর পোশাক খুলিয়ে ‘চুরি যাওয়া’ টাকা খোঁজা হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবারের ওই ঘটনার জেরে এ দিন ছাত্রীর মা গোপালনগর থানায় ও স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক নিতাই পালের কাছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ‘সম্ভ্রম নষ্ট’ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ স্বীকার করেননি।
জেলার স্কুল পরিদর্শক অমর শীল বলেন, “ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আমাকে ফোন করে জানান, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবু আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” হাবরার রাজবল্লভপুর হাইস্কুলে আবার নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে বেতপেটা করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক উরবান আলির বিরুদ্ধে। সৌরভ ঘোষ নামে ছাত্রটি আপাতত হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। তার বাবা নিজেও শিক্ষক। তিনি হাবরা থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। উরবান আলি অবশ্য বলেন, “সৌরভ এবং আর একটি ছেলে মিলে ক্লাসে অন্য একটি ছেলেকে মারধর করেছিল। তা জানতে পেরে আমি সৌরভকে সামান্য বেত মারি।” |