নিষিদ্ধ করতে তৎপরতা
খান সেনার এক কর্তার কলমেই বর্বরতার আখ্যান
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের ‘নির্যাতন-অত্যাচারের’ নিন্দায় মুখর সেই সময়ে দায়িত্বে থাকা এক পাক অফিসারই।
তবে জীবদ্দশায় তিনি এই সব ঘটনার কথা জানিয়ে যেতে পারেননি। পাক বাহিনীর চর্তুদশ ডিভিশন-এর লেফটেন্যান্ট মেজর জেনারেল খাদিম হুসেন রাজা নিজের পরিবারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কেবলমাত্র তাঁর মৃত্যুর পরেই যেন তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক গ্রন্থটি প্রকাশ করা হয়।
সম্প্রতি রাজার মৃত্যুর পর তাঁর লেখা ‘আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান ১৯৬৯-৭১’ বইটি পাকিস্তানে প্রকাশিত হওয়ায় পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে ইসলামাবাদ। মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনাদের নির্মম অত্যাচারের সবিস্তার চাক্ষুষ বিবরণই শুধু নয়, সেই সময় পূর্ব পাকিস্তানের কোন জেলায় কোন কোন অফিসার গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তার অকপট স্বীকারোক্তিও রয়েছে বইটিতে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যখন বাংলাদেশে তোলপাড় চলছে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারের লেখা বইটি ইসলামাবাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ বা ভারতের বাজারে এখনও বইটি আসেনি। বইটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য জারদারি সরকারকে চাপ দিচ্ছে পাক সেনারা। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই বইটি যাতে পাকিস্তানের বাজারে আর না দেখা যায়, তার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
খাদিম হুসেন রাজা তাঁর বইটিতে জেনারেল আয়ুব খান এবং জেনারেল ইয়াকুব খানের শাসনকালের বর্ণনা

খাদিম হুসেন রাজা
করেছেন। খান সেনারা কী ভাবে বাঙালি মহিলাদের নির্যাতন করেছে, সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করে অসদুপায়ে অর্থোপার্জন করেছে, তার বিশদ বর্ণনা রয়েছে রাজার লেখায়। পূর্ব পাকিস্তানের কম্যান্ডার টিক্কা খানের কথাও উল্লেখ করেছেন রাজা। জানিয়েছেন, ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ ঘোষণার জন্য’ শেখ মুজিবর রহমানকে সর্বসমক্ষে ফাঁসিতে ঝোলাতে চেয়েছিলেন টিক্কা।
মেজর জেনারেল রহিম খানের অত্যাচারের কথা বর্ণনা করে লেখক বলেছেন, ‘আমি যদিও ব্যক্তিগত ভাবে রহিমের বন্ধু ছিলাম, কিন্তু সুযোগ পেলেই তিনি আমাকে ভর্ৎসনা করতেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, পূর্ব পাকিস্তানের মানুষেরা একেবারেই কাপুরুষ। অনেক আগেই তাদের শায়েস্তা করা উচিত ছিল। পাঠকেরা এ থেকেই বুঝতে পারবেন, পুর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে কাণ্ডজ্ঞানের কতটা অভাব ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের কট্টরপন্থী সামরিক কর্তাদের।’
রাজা জানিয়েছেন, খান সেনাদের মহিলাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আর এক কম্যান্ডার শেখ নিয়াজি। নির্দেশ অমান্য করার জন্য লেখকের সামনেই কোমরবন্ধ থেকে পিস্তল বের করে এক বাঙালি অফিসারকে গুলি করেছিলেন নিয়াজি। এই নিয়াজিই যুদ্ধের শেষ দিকে ঢাকায় ৯০ হাজার পাক সেনা-সহ ভারতের ইস্টার্ন কম্যান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল জে এফ আর জেকবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ঢাকার পতন ঘটে। তার কিছু দিন আগেই নিয়াজি লেখকের কাছে তাঁর পূর্ব পাকিস্তানের বান্ধবীদের ফোন নম্বর চেয়েছিলেন বলে বইটিতে জানিয়েছেন রাজা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.