উত্তরবঙ্গ সফরের মধ্যেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ‘চিঠি-পর্ব’ নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে কিছুটা সাড়া পড়লেও তাকে নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আপাতত অনেক বেশি ‘আগ্রহী’ জিটিএ নির্বাচন এবং তরাই-ডুয়ার্স নিয়ে। যে কারণে তাঁর এই উত্তরবঙ্গ সফর। এ দিন সকালে ডুয়ার্স থেকে বেরিয়ে টানা প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সফর করে মুখ্যমন্ত্রী এসে পৌঁছেছেন কালিম্পং মহকুমার তাকদা-য়। |
পাহাড়ি অর্কিডের জন্য বিখ্যাত এই জনপদে ব্রিটিশ আমলের (১৯১১ সালে তৈরি) ভগ্নাবশেষ ক্লাবকে এক বছরের মধ্যে পুনর্নির্মাণ করে অত্যাধনিক করে গড়ে তুলেছে মমতার সরকারের বন দফতর। আসার পথে লামাহাটায় থেমে তিন মাস আগে শুরু করার নির্দেশ দিয়ে-যাওয়া পর্যটন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “পাহাড়ের জন্য গত ২৫ বছরে সিপিএম কিছু করেনি। জিটিএ নির্বাচন একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। আমরা তার মধ্যে দিয়ে পর্যটনকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়ে পাহাড়ের অর্থনীতিকে আবার সচল করবই!” রওনা হওয়ার আগে গরুমারা জাতীয় অভয়ারণ্যে গাছ পুঁতেছেন মুখ্যমন্ত্রী। |
অঝোর বৃষ্টির মধ্যেই হাতির শাবকের নামকরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ধূপঝোরায় সেই অনুষ্ঠানে। |
বন দফতরের আর্জিতে ছবি এঁকে দিয়েছেন তাদের বাড়িয়ে-দেওয়া ক্যানভাসে। অঝোর বৃষ্টির মধ্যে এক বছর দশ মাস বয়সী হাতির ছানার নামকরণ করেছেন ‘বর্ষণ’। তার বাবা-মা সূর্য-আমন মুখ্যমন্ত্রীকে শুঁড় তুলে নমস্কার করেছে। আর ডুয়ার্সের সব জেলার বন দফতরের সব স্তরের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে পর্যটন-পরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছেন।
এবং পাহাড়ে আসার পথে জারি রেখেছেন তাঁর ‘জনসংযোগ’। শিশুদের কোলে তুলে আদর করে, স্কুলফেরতা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে ঘরোয়া আলাপচারিতা করে বুঝিয়েছেন, তিনি পাহাড়ের সঙ্গে, পাহাড়ের জন্য আছেন। বুঝিয়েছেন, তিনি কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ শাসন করতে চান না। বুঝিয়েছেন, পাহাড়ে তাঁর ‘উপস্থিতি’ প্রমাণে সিপিএমের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে।
আশ্চর্য কী যে, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চিঠি বা ফোনের কথা শুনে তাঁর মুখে খেলা করবে সময়োচিত নির্লিপ্তি।
|