গত ৩৫ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা একটা আশ্চর্য স্বপ্ন পূরণের সাক্ষী থাকল গোটা দুনিয়া। ১৯৭৭ সালেই ঠিক করে নিয়েছিলেন বন্ধক মেটানোর শেষ কিস্তিটা শুধুমাত্র ‘পেনি’ দিয়ে শুধবেন তিনি। এত বছর বাদে তাঁর সেই লক্ষ্যটাই পূর্ণ হল গত এপ্রিলে। ৬২ হাজার ‘পেনি’ দিয়ে শেষ কিস্তি শোধ করলেন আমেরিকার মিলফোর্ডের বাসিন্দা টমাস দেগলে। দু’বাক্স ভর্তি ওই মুদ্রার ওজন প্রায় ৩৬০ কিলোগ্রাম। যার অঙ্ক ৮০০ পাউন্ডেরও বেশি।
১৯৭৭ সালে মিলফোর্ডের নতুন বাড়িতে স্ত্রী সান্দ্রাকে নিয়ে উঠে এসেছিলেন সদ্য বিবাহিত টমাস। সুখী গৃহকোণের স্বপ্ন সত্যি করতে সে সময়ে মিলফোর্ড ফেডারাল সেভিংস অ্যান্ড লোন অ্যাসোসিয়েশনে বন্ধকের মাধ্যমে টাকা নেওয়া ছাড়া পথ ছিল না বলে জানান টমাস। তবে তাঁর কথায়, “পরে পেনিতে কিস্তি শোধের গল্পটা শুরু হল স্রেফ মজার ছলেই।”
অবসর বিনোদনের একটা যুৎসই উপায় খুঁজছিলেন দেগল। তার পর অক্লান্ত বৃষ্টি আর বরফে স্নাত একটা লম্বা দুপুরে আচমকাই শুরু করলেন পেনি গোনা। দেগল জানিয়েছেন, শেষে তা জমানো আর গোনার নেশাই তাঁকে পেয়ে বসল। সেই তীব্র নেশা থেকেই এক সময় স্ত্রী-কে কথা দিয়ে ফেলেন যে, নিজেদের বন্ধকের শেষ কিস্তিটা তিনি শুধবেন শুধুমাত্র জমানো পেনি দিয়েই। সেই সঙ্গে অবশ্য শেষ কিস্তি মেটানোর ঘটনাটা নিজেদের জীবনে স্মরণীয়ও করে রাখতে চেয়েছিলেন বলে জানান তিনি। এ বছরের এপ্রিলে নিজের ‘কথা’-কে কাজে পরিণত করে দেখিয়ে দিয়েছেন দেগল যে, চেষ্টা করলে কি না হয়।
মিলফোর্ডের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, গত ২৪ এপ্রিলে মিলফোর্ড ফেডারাল-এ মোট ৮০০ পাউন্ড অঙ্কের দু’বাক্স পেনি জমা দিয়েছেন দেগল। সংখ্যায় যা ৬২টি হাজার। তিনি এক মাস আগে বিষয়টি সম্পর্কে মিলফোর্ড ফেডারাল-কে জানিয়েও রেখেছিলেন। গ্রাহকের এই অভিনব ইচ্ছা পূরণে তাদের কোনও আপত্তি ছিল না, জানিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, কিস্তি শোধের ওই দিনটি ছিল দেগল-সান্দ্রার বিবাহবার্ষিকী। সেটা অবশ্য কাকতালীয় বলেই দাবি দেগলের। তবে এই মুহূর্তে বাড়িতে পেনির চূড়ান্ত অভাব থাকলেও, যে তৃপ্তিতে ভরেছে তাঁদের গোটা দুনিয়া, বিবাহবার্ষিকীতে প্রিয় মানুষটির জন্য এর থেকে বড় উপহার আর কিছু হতেই পারে না বলে মনে করছেন মিলফোর্ড বাসিন্দারা। |