বাজি ধরে মাঝরাতে রাজ্য সড়কের উপর ‘বাইক-রেস’ চালানোর সময়ে ছিটকে পড়ে দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ মালদহ থানার সাহাপুরের মহামায়া মন্দিরের কাছে মালদহ-বুলবুলচন্ডী রাজ্য সড়কে ঘটনাটি ঘটে। মৃত যুবকের নাম বিট্টু বসাক (২২) ও শরৎ চট্টোপাধ্যায় (২৭)। দুজনেরই বাড়ি ইংরেজবাজার পুরসভার পুড়াটুলি এলাকায়। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জরিমানা করেও মালদহে বেপরোয়া বাইক সাইকেল চালানো বন্ধ করা যাচ্ছে। প্রতি মাসে প্রচুর জরিমানা করা হচ্ছে। জুন মাসে বেপরোয়া বাইক ও গাড়ি চালানোর জন্য ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার পরেও বেপরোয়া বাইক চালানো বন্ধ করা যায়নি। সচেতনতা না-বাড়ালে কেবলমাত্র জরিমানা করে বেপরোয়া বাইক চালানো রোখা যাবে না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ শহরের বেশ কিছু যুবক মাঝরাতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও মালদহ-বুলবুলচণ্ডী রাজ্য সড়কের পাশের ধাবায় পানভোজনের পরে বাজি ধরে বাইক নিয়ে প্রতিযোগিতা চালায়। জাতীয় সড়কের হাল খারাপ হওয়ার কারণে কয়েক মাস ধরে ওই রাস্তায় রেষারেষি বন্ধ থাকলেও মালদহ-বুলবুলচণ্ডী রাজ্য সড়কে এই রেষারেষি বেড়ে গিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, সোমবার রাতে কয়েকজন বন্ধু মিলে মালদহ ও মুচিয়ার মাঝখানে একটি ধাবায় খেতে যান। খাওয়াদাওয়া সেরে রাত ১ টা নাগাদ ৬ বন্ধু তিনটি বাইকে প্রতিযোগিতা করেন। মহামায়া মন্দিরের কাছে শরত চট্টোপাধ্যায় ও বিট্টু বসাকের বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে ছিটকে পড়ে। দুই বন্ধুকে রাস্তার ধারে ছিটকে পড়তে দেখে বাকি বন্ধুরা যে যার মতো পালিয়ে যায়। রাতে পুলিশ মোবাইলে টহল দেওয়ার সময় রাস্তার ধারে বাইক পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ থেমে যায়। এর পর বাইক দুটির প্রায় ৫০ মিটার দূর থেকে পুলিশ দুই বন্ধুর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদের পকেট থেকে মোবাইল বের করে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে খবর দেয়।
বাইক দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যু সংবাদ শোনার পরে জ্ঞান হারিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নীলকান্ত চট্টোপাধ্যায়। বিট্টুর মা জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, “কাল সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে বিট্টু রাতে বাড়ি ফেরে নি। রাতে পুলিশ জানায় ছেলের বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ছেলে যে মারা গিয়েছে ভাবতে পারছি না।” এ কথা বলেই হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে জেলার বাইক দুর্ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়। এ বছর বাইক দুর্ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। |