টেমসের তীরে পদকের সন্ধানে
খালি হাতে ফিরতে চান না বিজেন্দ্র-মেরি
কটা অলিম্পিক পদক কী ভাবে একটা খেলার চেহারাই পাল্টে দিতে পারে, সেটা ভারতীয় বক্সিং দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। ২০০৮ সালে বিজেন্দ্র সিংহর বেজিংয়ে জয়ের পদক ঝড় তুলে দেয় গোটা দেশে।
হরিয়ানার ভিওয়ানি শহরকে বলা হয় ভারতীয় বক্সিংয়ের প্রসূতিগৃহ। বিজেন্দ্র সিংহ, অখিল কুমার-সহ দেশের বেশির ভাগ বক্সারই ভিওয়ানির কোচেদের কাছে ট্রেনিং নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন। গত চার বছরে যে ভাবে প্রতিভাবান বক্সাররা উঠে আসছে তা দেখে আপ্লুত ভারতীয় বক্সিং ফেডারেশনের সচিব পি কে মুরলিধরন রাজা।
কিন্তু তাতে কি আরও বেশি অলিম্পিক পদক আসবে? জাতীয় বক্সিং সংস্থার সচিব বললেন, “বিজেন্দ্রর পদকটা যে কত মূল্যবান সেটা বক্সিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দেখে বোঝা যাচ্ছে। তার বড় প্রমাণ ১৮ বছরের শিবা থাপা ও ১৯ বছরের সুমিত সাঙ্গওয়ান। এই বয়সে দু’জন শুধু লন্ডন অলিম্পিকের ছাড়পত্র জোগাড়ই করেনি, লন্ডনে ওরা পদকেরও দাবিদার।”
আমাদের বক্সাররা আগে সাইকেলে আমাদের কাছে কোচিং নিতে আসত। আর এখন আসে দামি গাড়িতে চড়ে। তা হলে বুঝতেই পারছেন, আমাদের দেশেও বক্সিংয়ের মানটা কতটা বেড়েছে। শুধু বিজেন্দ্র সিংহ বা মেরি কম নন, আরও অনেক বক্সারই পদক আনবে।
জাতীয় কোচ
মজার ব্যাপার হল, বক্সিংয়ে ভারতের দুই সেরা বাজি বিজেন্দ্র সিংহ ও মেরি কম যথেষ্ট লড়াই করে শেষ মূহূর্তে লন্ডনের ছাড়পত্র পেয়েছেন। পাতিয়ালায় ট্রেনিং শেষ করে এখন ভারতীয় বক্সাররা অলিম্পিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাতিয়ালা থেকে বিজেন্দ্র তো বলেই দিলেন “দেখুন, লন্ডনে আমরা শুধু সময় নষ্ট করতে যাচ্ছি না। এ বার অলিম্পিকের মঞ্চে ভারতীয় পতাকা আমরা অনেকবার ওড়াতে চাই। আর যত কষ্ট করেই বা আমি যোগ্যতা অর্জন করে থাকি না কেন, খালি হাতে ফেরার বান্দা আমি নই।” বিজেন্দ্র ছাড়া অলিম্পিকে ভারতের বাকি সব বক্সার প্রথমবার অলিম্পিকে যাচ্ছেন। এমনকী পাঁচবারের বিশ্ব-চ্যাম্পিয়ন মেরি কমও। দুই বাচ্চার মা মেরিকমের এটাই প্রথম ও শেষ অলিম্পিক। তাই ভারতীয় বক্সিংয়ের ইতিহাসে নিজের নামটা তিনি স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখতে চান। বললেন “আমি জানি, লন্ডনে মাত্র দুটি রাউন্ড জিতলেই আমি ইতিহাস তৈরি করতে পারি। তাই এই সুযোগটা আমি নষ্ট করতে চাই না।”
বিজেন্দ্রদের এত দিনের কোচ গুরুবক্স সিংহ সাঁধু ১৯৯৩ সাল থেকে বক্সিংয়ের কোচ। লন্ডন অলিম্পিকের পরই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। নিজের মুখে কারও নাম না করলেও তাঁর আশা বিজেন্দ্র, দেবেন্দ্র, জয় ভগবান, মনোজ এবং মেরি কম এবার অলিম্পিক পদকের প্রবল দাবিদার।” আর ভারতের কিউবান কোচ ব্লাস আই ফার্নান্ডেজ গুরুবক্সের মতো অতটা আশাবাদী না হলেও মনে করেন পদকের সংখ্যাটা বাড়বে। বললেন “আমার সবথেকে বেশি ভাল লেগেছে ভারতীয় বক্সাররা এ বার যে ভাবে একে অন্যকে ছাপিয়ে যেতে মরিয়া। তাতে ভারতের শুধু পদকের সংখ্যাটাই বাড়বে না। সেরাটা দিতে পারলে ভারতীয় বক্সিং বিশ্বের সমীহ আদায় করবেই।”
অলিম্পিক পদকের জন্য লড়াইটা লড়বেন ভারতের বাকি বক্সার বিকাশ কৃষ্ণ (৬৯ কেজি), জয় ভগবান (৬০ কেজি), দেবেন্দ্র সিংহ (৪৯ কেজি), শিবা থাপা (৫৬ কেজি), মনোজ কুমার (৬৪ কেজি) ও সুমিত সাঙ্গওয়ান (৮১ কেজি)। কোচ গুরুবক্স ও ফার্নান্ডেজরা যা বলছেন সেটা যে কতটা সত্য তা বিকাশ কৃষ্ণ ও শিবা থাপাকে দেখলেই বোঝা যায়। বিকাশ যেমন বলেই দিলেন “দেখুন কার সঙ্গে লড়ছি এবং কত বড় নাম সেটা বড় নয়। আমি বিকাশ কৃষ্ণ এবং আমার বিশ্বাস আমার ইভেন্টে আমিই সেরা।” আর শিবা থাপা বললেন “লন্ডনের বিজয়ী মঞ্চে ভারতীয় পতাকা ওড়াবই।” এখন এটাই দেখার, ভারতীয় বক্সারদের মধ্যে শেষ কথাটা কে বলেন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.