লালুর শ্যালক সুভাষের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় খুন |
বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে আরজেডি-র প্রাক্তন সাংসদ সুভাষ যাদবের শ্যালক পঙ্কজ যাদব ওরফে পাপ্পুকে। একই সঙ্গে তাঁর বাড়িতে পাপ্পুর বাড়ির কাজের লোকের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। সুভাষ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীর ভাই ও লালুপ্রসাদের শ্যালক। আজ সকালে, এই জোড়া খুনের ঘটনায় ফের রাজধানী পটনার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
আজ সকালে দিঘা থানার পিছনে, নিরালা নগরের একটি পুকুরে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। মৃতদেহটি দেখে তাঁরা চিনতে পারেন। ওই মৃতদেহটি প্রাক্তন সাংসদ সুভাষের শ্যালক পাপ্পুর। এলাকার মানুষ খবর দেয় পুলিশকে। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ মৃতদেহের পকেটের কাগজপত্র ঘেটে তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। মৃতদেহটি যে পাপ্পুর সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পুলিশ পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে, পটনার রাজীব নগর থানার আকাশবাণী এলাকায়। পাপ্পুর বাড়িতে ঢুকে পুলিশ পাপ্পুর শোবার ঘরের মেঝেতে তাঁর বাড়ির কাজের লোক বাবলুর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে আততায়ীরা পাপ্পুকে তুলে নিয়ে গেল? প্রায় ছ’মাস ধরে পাপ্পু একাই থাকতেন তাঁর বাড়িতে। সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী আছেন বাপের বাড়িতে। ফলে বাড়ি ফাঁকা থাকার খবর ছিল আততায়ীদের কাছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কাজের লোককে প্রথমে খুন করে তারপরে পাপ্পুকে তুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। বাড়ি থেকে দূরে নিয়ে গিয়ে তাকে খুন করাই ছিল আততায়ীদের উদ্দেশ্য।
এ দিন সকালে পাপ্পুর মোবাইল ফোন থেকে তাঁর এক বন্ধুর কাছে ফোন আসে। পাপ্পুর বন্ধুকে বলা হয়, ‘‘দানাপুরের সগুনা থেকে বলছি। ফোনটি এখানে পাওয়া গিয়েছে। এটি কার তা জানার জন্য ফোন করছি। প্রথমে এই নম্বরটি পেয়ে ফোন করলাম।’’ এরপরেই ফোনটি কেটে দেওয়া হয়। এত সকালে পাপ্পুর ফোন কী ভাবে দানাপুরে গেল তা ভেবে বন্ধুটির সন্দেহ হয়। এরপর তিনি পাপ্পুর এক আত্মীয়কে ফোন করে তাঁর বাড়িতে পৌঁছন। সেখানে এসে ওই বন্ধুটি দেখেন, বাড়ির দরজা হাট করে খোলা। বাড়িতে ঢুকে তিনি দেখতে পান বাবলুর মৃতদেহটি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরপরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ততক্ষণে দীঘা থানার পুলিশ পাপ্পুর মৃতদেহটি শনাক্ত করে ফেলেছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ওই বন্ধুটির নাম বলতে চায়নি।
বিহারে লালু-রাবড়ী জমানায় সুভাষের নামে একাধিক অভিযোগ ছিল। সুভাষের অন্যতম সঙ্গী ছিল তাঁর শ্যালক পাপ্পু। পাপ্পু ছিলেন রাজ্য বিধান পরিষদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। অভিযোগ, সেই সময় পাপ্পু গোপালগঞ্জের দাগি অপরাধী সতীশ পাণ্ডেকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন। খুনের কারণ কী তাও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। পটনার এসএসপি অমৃত রাজ বলেন, “আমরা তাঁর আত্মীয়দের জন্য অপেক্ষা করছি। বাড়িতে তাঁর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলে খুনের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা জানার চেষ্টা করা হবে।” |