মানসিক ভারসাম্যহীন এক পৌঢ়াকে ঘরে ফেরালেন সমাজসেবীরা। চল্লিশোর্ধ্ব ওই মহিলার নাম রাধা হাজরা। বাড়ি বর্ধমানের পুলিশ লাইনের কাছে। পুলিশ জানায়, প্রায় দু’বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। ঘুরতে ঘুরতে হাজির হন হরিয়ানার শীর্ষার রামকানাইয়া আশ্রমে। সেই আশ্রমের পরিচালকেরা তাঁর চিকিৎসা করান। ধীরে ধীরে ওই মহিলা নিজের স্মৃতি ফিরে পান। তারপরেই তাঁর বাড়ির বর্ণনা এবং বর্ধমান পুলিশ লাইনের কথা শুনে ওই আশ্রম কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন বর্ধমানের জেলা পুলিশের সঙ্গে। পুলিশ স্থানীয় সমাজসেবী, স্থানীয় পঞ্জাবি সমাজের মুখপাত্র মহিন্দর সিংহ সালুজেকে এই ঘটনার কথা জানান। মহিন্দরই আশ্রমটির সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই মহিলাকে বর্ধমানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন হরিয়ানায় থেকে ওই মহিলা বাংলার চেয়েও পঞ্জাবি ভাল বলতে পারেন। টেলিফোনে যখন ওঁর সঙ্গে বাংলায় কথা বলছিলাম, উনি তখন পঞ্জাবিতে উত্তর দিচ্ছিলেন। ওঁর মুখে ওঁর ছেলে মেয়ের কথা শুনে, আমি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরাও মাকে ফেরত চান।” |
শেষ পর্যন্ত সালুজার চেষ্টাতেই ওই আশ্রমের তরফ থেকে দুই কর্মী ওই মহিলাকে ট্রেনে করে বর্ধমান পুলিশের এসডিপিও (দক্ষিণ) অম্লানকসুম ঘোষের অফিসে নিয়ে আসেন। অম্লানকুসুমবাবু রাধাদেবীর মেয়ে ও জামাইকে ডেকে পাঠান। তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। মাকে পেয়ে খুশি রাধাদেবীর মেয়ে সুষমা। তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্মের আগেই বাবা মাকে ছেড়ে চলে যান। মা-ই ছিলেন একমাত্র ভরসা। মা হারিয়ে যাওয়ার পর কী করে বাচবো, সেটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। পড়শিরা আমার বিয়ে দেন। আমার স্বামী একটি ঠিকাদারি সংস্থার কর্মী। মা আমাদের কাছেই থাকবেন।”মেয়ে-জামাইকে ফিরে পেয়ে খুশি রাধাদেবীও। তিনি বলেন, “কী করে মেয়েকে মানুষ করব, তা ভাবতে ভাবতেই আমার সব গোলমাল হয়ে গিয়েছিল।” |