|
|
|
|
জাতীয় মেধাবৃত্তি পেল ঝাড়গ্রামের শবর ছাত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
আদিম উপজাতিভুক্ত শবর সম্প্রদায়ের এক ছাত্রী জাতীয় মেধা-বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ঝাড়গ্রামের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বছর চোদ্দর ওই ছাত্রী প্রতিমা শবর এ বছর থেকেই ‘স্টেট লেভেল ন্যাশন্যাল মিন্স-কাম-মেরিট স্কলারশিপ’ পাবে বলে স্কুল-শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারভুক্ত মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য জাতীয় বৃত্তি-প্রদানের পরীক্ষাটি প্রতি বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। নিম্ন আয়ভুক্ত পরিবারের অষ্টম শ্রেণির মেধাবী পড়ুয়ারা নির্দিষ্ট কিছু শর্তের ভিত্তিতে ওই পরীক্ষা দিতে পারে। গত বছর ঝাড়গ্রাম মহকুমার ১৬৪ জন দুঃস্থ-মেধাবী পড়ুয়ার সঙ্গে প্রতিমাও ওই পরীক্ষা দিয়েছিল। এ বছর জুন
|
প্রতিমা শবর। —নিজস্ব চিত্র |
মাসে মেধা-বৃত্তি প্রাপকদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। ১৬৪ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র ৩৯ জন।
ঝাড়গ্রামের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সমর দাস জানান, উত্তীর্ণ ৩৯ জনের মধ্যে দু’জন আদিবাসী ছাত্রী। ওই দু’জনের অন্যতম প্রতিমাই একমাত্র আদিম উপজাতিভুক্ত শবর সম্প্রদায়ের। স্কুল-শিক্ষা দফতর সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, সফল এই পড়ুয়াকে নবম শ্রেণিতে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়। নবম শ্রেণির পরে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি বছর একই হারে বৃত্তি পেতে পারে। তবে, সে ক্ষেত্রে তাকে প্রতি ক্লাসে নিয়মিত পড়ুয়া হিসেবে প্রতি বছর (মাধ্যমিক পরীক্ষা-সহ) নির্দিষ্ট শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
প্রতিমার স্কলারশিপ লাভে স্কুলের শিক্ষিকাদের পাশাপাশি শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ কন্যাগুরুকুলের আশ্রমিকেরাও ভীষণ খুশি। কন্যাগুরুকুলের সহ-সম্পাদিকা পরিব্রাজিকা আত্মহৃদয়া বললেন, “মেধাবী-প্রতিমার জন্য আমরা গর্বিত। প্রতিমার নজির অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।” প্রতিমার বাড়ি বিনপুরের আশাকাঁথি গ্রামে। বাবা নির্মল শবর দিনমজুর। মা পুষ্পদেবী বধূ। পড়াশোনায় অদম্য ইচ্ছে থাকায় শবর কন্যাটিকে প্রথম শ্রেণিতেই সারদাপীঠে ভর্তি করেন নির্মলবাবু। সারদাপীঠের আবাসিক-পড়ুয়া প্রতিমা প্রতি ক্লাসেই ভাল ফল করে আসছে। তার ভাই কার্তিক ও বোন মল্লিকাও গ্রামের স্কুলে পড়ে, যথাক্রমে নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে। প্রতিমা জানায়, “ছুটিতে যখন বাড়ি যাই, তখন আমার মতোই গ্রামের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছোটদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের বলি।” ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চায় সে। |
|
|
|
|
|